এই সময়ে পায়ের যত্ন
বাতাসে এখন ফাল্গুনের আমেজ শুরু। না খুব বেশি গরমের উত্তাপ না শীতের হিমেল হাওয়া। আবহাওয়াটা শরীরের অনুভূতির জন্য আরামদায়ক হলেও আমাদের ত্বকের জন্য কিন্তু আরামদায়ক নয়। কারণ প্রকৃতির পরিবর্তন এ সময়টায় আমাদের ত্বকেও কিছু পরিবর্তন আসে। মুখের ত্বকের মতো এ সময় পায়ের ত্বকেও দেয় বেশ কিছু সমস্যা।
‘এ সময় ঋতু পরিবর্তনের কারণে অনেকেরই পা খসখসে হয়ে যায়। আবার শীতে পা ফাটার সমস্যাটা এখনো অনেকের রয়ে গেছে। যেহেতু ধুলাময়লা এখন বেশি আবার একটু একটু গরমের কারণে পা ঘামছেও, এতে পায়ে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়া, পা কালচে বা বিবর্ণ হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়টায়। যে কোনো ঋতুতে পা সুন্দর ও সজীব রাখতে নিয়মিত যত্নের বিকল্প নেই বলে জানান হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের ত্বক বিশেষজ্ঞ শাহীনা আফরিন মৌসুমী।
তিনি বলেন, ‘যাদের হাত-পায়ের ত্বক অত্যধিক রুক্ষ, তাদের ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার না করে ময়েশ্চারাইজারযুক্ত সাবান ব্যবহার করা উচিত। এ সময় পায়ের শুষ্কতা দূর করতে, পা সজীব ও সতেজ রাখতে বাইরে থেকে ফিরে পায়ের পাতা থেকে গোড়ালি পর্যন্ত কিছুক্ষণ গ্লিসারিন দিয়ে ম্যাসাজ করুন। এরপর কুসুম গরম পানিতে ভিনেগার ও লবণ মিশিয়ে ১০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর হালকাভাবে ঝামা দিয়ে ঘষে পা পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। পায়ের ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল থাকবে।’
পা সমৃণ, কোমল ও পায়ের ত্বকের কালচে দাগ দূর করতে বাইরে থেকে ফিরে ৪টি ডিমের কুসুম, ৩ চা-চামচ নারকেল তেল ও ৪ টেবিল চামচ কেউলিন পাউডার মিশিয়ে পেস্ট করে পায়ে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কোমলতার পাশাপাশি পায়ের ত্বকে ফিরে আসবে হারানো উজ্জ্বলতা।
শুধু দিনে নয়। শীত শেষে পায়ের ত্বক সুন্দর রাখতে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও পায়ের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। এ জন্য এক কাপ খাঁটি নারকেল তেল, ৪ চা-চামচ কর্পূর, ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ও ১ টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে একটি বোতলে ভরে রাখুন। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মিশ্রণটি পায়ে লাগিয়ে নিন।
একটু একটু গরমের কারণে এ সময়টায় অনেকেরই পা ঘামতে শুরু করেছে। পা ঘামা রোধ করতে কিছুটা মুলতানি মাটি ও বরিক পাউডার মিশিয়ে একটি বক্সে রেখে দিন। বাইরে যাওয়ার আগে মিশ্রণটি পায়ে পাফ করে নিন। পা ঘামা রোধ হবে সেই সঙ্গে পা থাকবে সতেজ।
পা ভালো রাখতে সপ্তাহে একদিন পা পেডিকিওর করুন। একটি ছোট গামলায় গোড়ালি ডোবার মতো পরিমাণে কুসুম গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ পেডিকিওর পাউডার কিংবা শ্যাম্পু, ৩ টেবিল চামচ লবণ, আধা টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে এতে ১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। এরপর পানি থেকে পা তুলে ঝামা দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন। আঙুল ও নখের ভেতর ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করুন। এরপর নখ ফাইল করে নিন। এবার চিনি ও কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে দুই পায়ের পাতা স্ক্র্যাব করুন। দাগ থাকলে লেবুর রস ফেলে ভেতরের খোসাটা ঘষে নিন। এবার কুসুম গরম পানিতে আরও একবার পা ধুয়ে ও মুছে ময়েশ্চারাইজার কিংবা গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে পায়ের গোড়ালিসহ তালুতে লাগিয়ে রাখুন।
ধুলাবালি পায়ের বড় শত্রু। তাই এ সময় পা সব সময় পরিষ্কার রাখুন। বাইরে থেকে ফিরেই দ্রুত পা ধুয়ে ফেলুন। গোসলের সময় নিয়মিত পায়ের গোড়ালি স্ক্র্যাব করুন। এতে পায়ের ত্বক কোমল থাকবে। পা ধোয়ার পর বা গোসলের পর পা ভেজা থাকা অবস্থাতেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়
ছবিঃ সংগৃহীত