ঈদের হেয়ারস্টাইল

ঈদের হেয়ারস্টাইল

উৎসব মানেই সাজে আলাদা আড়ম্বর। গুরুত্বসহকারে পরিপাটি লুক আনা। আর সেজন্য চুলের সাজে থাকে উল্লেখযোগ্য বৈচিত্র্য। এই আয়োজনে থাকছে উৎসবে চুলের সাজের সাত-সতেরো।

 

ফুলে সাজবে খোঁপা-

বাঙালি রমণীর কাছে স্পেশাল পোশাক মানেই শাড়ি। আর এই শাড়ির সঙ্গে নজরকাড়া একটি খোঁপা, তাতে সুবাসিত ফুলের মেলবন্ধন থাকবে না তা কি হয়? কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে আপনার খোঁপাও সাজতে পারে এমন অপরূপ সাজে। প্রথমেই চুলগুলো ভালোভাবে চিরুনি করে নিন। তারপর ছোট্ট সিঁথির পেছনের চুলগুলো দিয়ে হালকা পনিটেইল করুন। এবার পুরো চুল একটা রাবারে বেঁধে নিন। একে একে অল্প করে চুল নিয়ে ববি পিন দিয়ে আটকাতে হবে। এমনভাবে আটকাবেন যাতে একটা খোঁপার আকার ধারণ করে। চুলের ভিতরের দিকে উল্টো ব্রাশ করলে খোঁপাটা ফুলবে। খোঁপা বড় করতে না চাইলে প্লেন ব্রাশই যথেষ্ট। এবার ফুল দিয়ে খোঁপা সাজানোর পালা। সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে যেতে বেছে নিতে পারেন দোলনচাঁপা। গন্ধে মাতোয়ারা হবে যে কেউ। সাধারণ ফুল হলে জারবারা, গোলাপ বা অন্য ফুলও খারাপ লাগবে না।

 

খোলা চুলে বান স্টাইল-

মাথার ওপরের চুল আড়াআড়ি করে দুই ভাগে ভাগ করে নিন। সামনের কিছু চুল ছেড়ে দিয়ে পেছনের পুরো চুল ফুলিয়ে নিন। এক্ষেত্রে পেছনের চুলের ব্যাক সাইড থেকে উল্টো ব্রাশ করতে হবে। এবার সামনের থেকে আবার কিছু চুল নিয়ে প্লেন ব্রাশ করে ফুলানো চুলের ওপর দিয়ে দিন। যাতে উল্টো ব্রাশের এলোমেলো চুলগুলো না দেখা যায়। তারপর ইচ্ছামতো বান করুন। ববি পিন বা পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে। বানের চারপাশ ঘুরিয়ে পুঁতির মালা দিয়েও আনতে পারেন যা অন্যরকম লুক দেবে।

 

টুইস্ট খোঁপা-

এই স্টাইলে আপনি অল্প সময়ে চুলে পার্টি সাজ দিতে পারবেন অনায়াসে। প্রথমেই কপালের সামনের চুলগুলো নিয়ে একটি পনিটেইল করে নিন। অর্থাৎ সামনের চুলগুলো পছন্দমতো ফুলিয়ে বেঁধে নিতে হবে। এবার পরের এক স্টেপ চুল নিয়ে একটা হালকা ঝুঁটি বাঁধুন। তারপর এই ঝুঁটির মাঝ বরাবর একটু ফাঁকা করে পুরো ঝুঁটির চুল সেই ফাঁকে উল্টো করে ঘুরিয়ে পেছন দিয়ে বের করে দিন। একই কাজের পুনরাবৃত্তি করুন। এভাবে এক লাইন বরাবর চার থেকে পাঁচটি ঝুঁটি বাঁধতে হবে। সবশেষে কাঁধের কাছের বাড়তি চুলগুলোতে একটি সাধারণ খোঁপা করে আটকে দিন।  খুব অল্প সময়ে বাঁধা খোঁপায় আপনাকে দেখাবে অনন্য।

 

খোলা চুলে ফ্যাশন-

উৎসবে চুলের সাজ মানেই অনেক রকম কারিকুরি করাচুলের বাঁধন নয়। আবার জমকালো সাজ মানেই সব সময় চুল বেঁধে মাথার ওপর তুলতে হবে তা কিন্তু নয়। খোলা চুলেও হতে পারে দারুণ ফ্যাশন। এমন একটি সাজ দিতে চাইলে প্রথমেই চুলগুলোকে প্লেন ব্রাশ করে নিন। তারপর কপালের যে কোনো পাশে সিঁথি কেটে নিতে হবে। যে পাশে সিঁথি ঠিক তার বিপরীত পাশে মাথার সামনের চুলগুলো আলাদা করে নিন। পেছন থেকে কিছু চুল নিয়ে একটা রাবারে বেঁধে নিন। সেখান থেকে চিকন একটি বেণি করুন। বাকি চুলগুলো কয়েকটি ভাগে ভাগ করুন। এবার সেগুলো ছোট ভাঁজে ববি পিন দিয়ে আটকে নিন। সব আটকানো হলে আগেই করে রাখা বেণি খোঁপার চারপাশে ঘুরিয়ে আটকে দিন। খোলা চুলের মাথা কার্ল বা সোজা যাই হোক ভালো দেখাবে।

 

ফাংকি বেণি-

ঈদের সময় এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ানোর জন্য যারা স্কার্ট, টপ, পালাজ্জো বা মিডি ফ্রকের মতো পোশাক পরবেন বলে ঠিক করেছেন, তারা অনায়াসেই এভাবে চুল বাঁধতে পারেন। বাঁ দিকে সিঁথি করে নিন। এবার বাঁ দিক থেকে চিকন বেণি টেনে নিন। ডান দিকের বাকি চুলগুলোতে একটু এলোমেলো পেঁচিয়ে নিলেই হয়ে যাবে একটা নতুন বেণি। এ ধরনের ফাংকি বেণিতে খুব বেশি মেকআপ এবং গয়না না পরাই ভালো।

 

ঢেউ খেলানো চুল-

খোলা চুলের ঢেউ খেলানো স্টাইল এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর একটি সুন্দর নামও রয়েছে ‘বিচ ওয়েভ’। বিচ ওয়েভে সাধারণত চুলটা কোঁকড়া হয়ে যায়। চুলের সাজে এই বিচ ওয়েভ আবহ আনতে হলে চুলকে কিছুটা রাফ করে নিতে হবে। এই জন্য ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। তারপর টং দিয়ে চুলটাকে কোঁকড়ানো করে হাত দিয়ে ছাড়িয়ে নিলেই আসবে বিচ ওয়েভের আবহ। ঐতিহ্যবাহী শাড়ির সঙ্গে এই চুলের স্টাইল চেহারায় আনবে ভিন্ন আবহ।

 

টিপস-

- ঈদের অন্তত একদিন আগে চুলের পরিচর্যা করুন।

- অয়েল ম্যাসাজ বা তেল লাগিয়ে পরে শ্যাম্পু করতে পারেন।

- চুলের ধরন বুঝে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে চুলের স্টাইল করতে সুবিধা হবে।

- আবার হেয়ার স্টাইল করতে চুল ব্লো ড্রাই করলে পরে চুল শুষ্ক হয়ে যায়, তাই ভালো কোনো হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন।

- ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে চুলের পরিচর্যা করতে শুরু করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন

ছবিঃ সংগৃহীত