কোমল ত্বকের জন্য যা করবেন
শুষ্ক, রুক্ষ ত্বক। এতটাই খারাপ অবস্থা যে ত্বকে সাদা খড়িও দেখা যাচ্ছে। সকালে তাড়াহুড়ো করে বের হয়েছেন। ক্রিম লাগানোরও সময় পাননি। ফলাফল—সারা দিন শুকনো মুখে ঘুরতে হবে। ত্বকের কোমলতার জন্য এর স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখা প্রয়োজন। আর্দ্রতার অভাবে ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে সহজেই বুড়িয়ে যায়। তাই সৌন্দর্যচর্চায় ক্লিনজিংয়ের মতো ময়েশ্চারাইজিং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তবে এক দিন পরিচর্যা নিয়ে সপ্তাহে বাকি ছয় দিন কিছুই না করাটা খারাপ। ত্বকের ধরন বুঝে সব ঋতুতেই প্রতিদিন উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে, তবে ত্বক কোমল থাকবে।
ত্বকের ধরন বুঝে
বাজারে এখন ত্বকের ধরন অনুযায়ী নানা ধরনের ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। যে ত্বকের জন্য যেটা উপযুক্ত, সেই ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। কিউবেলার রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা মুন্নী বললেন, শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযুক্ত হবে অয়েল বেসড ময়েশ্চারাইজার। কেননা শুষ্ক ত্বকের জন্য তুলনামূলক বেশি আর্দ্রতা প্রয়োজন। ত্বক তৈলাক্ত হলেও ময়েশ্চারাইজার বাদ দেওয়া উচিত নয়। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ওয়াটার বেসড ময়েশ্চারাইজার। এতে তেলের পরিমাণ কম, তাই তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি উপযুক্ত। এ ছাড়া জেল-জাতীয় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যায় তৈলাক্ত ত্বকে। ত্বকের তৈলাক্ত জায়গাগুলো (যেমন টি-জোন) বাদ দিয়ে শুষ্ক অংশে ময়েশ্চারাইজ করতে পারেন। মিশ্র বা স্বাভাবিক ত্বকে যেকোনো ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যাবে। ঋতুভেদেও ময়েশ্চারাইজারের ধরন পরিবর্তন করা ভালো। শীতকালে একটু ভারী এবং বছরের অন্যান্য সময় কিছুটা হালকা ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
পরিষ্কার ত্বকে ময়েশ্চারাইজার
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে ত্বক পরিষ্কার না করলে ধুলো-বালি ও ময়লা ত্বকের ভেতর ঢুকে ব্রণ, কালো দাগ তৈরি করতে পারে। এমনকি সংক্রমণও (ইনফেকশন) হতে পারে। ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কারের জন্য ফেসওয়াশ ব্যবহার করার ওপরও গুরুত্ব দেন রূপবিশেষজ্ঞরা। রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে ভালো কোনো ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশ মুখে লাগিয়ে হালকা মালিশ করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ ছাড়া ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে রুটিনমাফিক স্ক্রাব করতে পারেন। তবে সপ্তাহে দু-তিন দিনের বেশি স্ক্রাব করা উচিত হবে না।’
কখন ত্বক ময়েশ্চারাইজ করবেন
সকালে মুখ ধোয়ার পর অথবা গোসলের পর অবশ্যই ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা উচিত। যারা সাধারণত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকক্ষে বেশিক্ষণ থাকেন, তাদের নিয়মিত ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা জরুরি। বাইরে যাওয়ার আগে এসপিএফযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো। সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে সে ক্ষেত্রে আর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। বাইরে থেকে ফিরে ত্বক পরিষ্কার করে গায়ে লোশন মাখতে পারেন। ‘রাতে ঘুমানোর আগে হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে সারা দিন ত্বক কোমল থাকবে’—বললেন ফারজানা মুন্নী। আঙুল দিয়ে মুখে ঘষে নয়, বরং আলতো করে আঙুল দিয়ে চেপে চেপে ময়েশ্চারাইজার লাগালে ত্বক তা সহজেই শুষে নেবে। মুখের সঙ্গে গলায়ও কিছুটা ময়েশ্চারাইজার মাখা উচিত।
প্রাকৃতিক উপাদান
ফেসওয়াশ ও ময়েশ্চারাইজার এখন সহজলভ্য হলেও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে চান অনেকে।
এ ক্ষেত্রে যা করবেন—
* মসুরের ডালের বেসনের সঙ্গে টক দই মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ত্বক পরিষ্কার এবং ময়েশ্চারাইজ হবে।
* রাতে ঘুমানোর আগে মুখে এলোভেরা মেখে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ত্বকে কোমলতা আসবে।
* মধু, পাকা কলা পেস্ট করে মেখে কিছুক্ষণ রাখার পর ধুয়ে ফেললেও ত্বকের আর্দ্রতা জোগাবে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, নকশা
ছবিঃ সংগৃহীত