হাতাকাট পোশাক পরতে চাইলে
গরমের সময় আরাম দেয় হাতাকাটা পোশাক। তবে হাতাকাটা পোশাক পরতে চাইলে হাতটাও রাখতে হবে সুন্দর। হাতের পশম দূর করা, ত্বক মসৃণ রাখা, হাতের ব্যায়াম করা, রোদ থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন লাগানো—ইত্যাদি বিষয় নিয়মিত চর্চা করার মাধ্যমে সুন্দর রাখতে হবে হাতের গঠন ও ত্বক।
পোশাকের সৌন্দর্য পুরোটাই নির্ভর করে আত্মবিশ্বাসের ওপর। হাতাকাটা পোশাক যদি নির্ভয়ে ও নিঃসংকোচে পরা যায়, তাহলে আলাদা ব্যক্তিত্ব যোগ হয়। এরপরও খোলা হাতের ওপর থেকে নজর একটু সরাতে চাইলে গলায় সুন্দর হার, কানে আকর্ষণীয় দুল আর হাতভর্তি বালা যোগ করতে পারেন হাতকাটা পোশাকের সঙ্গে। এতে কিছুটা বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাবেন আপনি—এমনই মনে করেন আফসানা ফেরদৌসী ক্লদিংয়ের ফ্যাশন ডিজাইনার আফসানা ফেরদৌসী। রোদে পুড়ে অনেক সময় হাতের খোলা জায়গাটুকুর রং তামাটে হয়ে যায়। হাতাকাটা জামা পরলে সেটা বেশি চোখে পড়ে। বাইরে বের হওয়ার সময়ে চাইলে হাতাকাটা পোশাকের ওপরে শ্রাগ বা কার্ডিগান চাপিয়ে নিন। রোদে হাত পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও কমবে এতে করে। হাতাকাটা পোশাক বা টপ পরার সময় কিছু বিষয় মাথায় রেখে পরতে হবে। তা না হলে সেটা ফ্যাশন দুর্যোগে রূপ নেবে।
বাজার ঘুরলে বিভিন্ন ডিজাইনের হাতাকাটা পোশাক পাবেন। তবে সেটা অবশ্যই শারীরিক গঠনের সঙ্গে মানানসই হতে হবে। যেমন যদি কারও বিউটি বোন থাকে, তাহলে স্ট্র্যাপ স্টাইলের বা অফ শোল্ডার পোশাক পরতে পারেন। অফ শোল্ডার ড্রেসও পাবেন বিভিন্ন ধরনের। ওয়ান শোল্ডার ড্রেসেও অনেক সময় বোল্ড লুক আসে। তাতে যোগ করতে পারেন ছোট্ট আকারের ফ্রিল।
খোলা হাতের পোশাক পরলে হাত সুস্থ দেখানো জরুরি বলেও মনে করেন আফসানা ফেরদৌসী। সে জন্য হাতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে আর দাওয়াতে যাওয়ার সময়ে ব্যবহার করতে পারেন শিমার।
রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীনও অবশ্য একই কথা বলছিলেন, হাতাকাটা পরতে গেলে প্রথমেই চিন্তা করতে হবে হাতের গঠন কেমন। হাত খুব বেশি ভারী হলে হাতাকাটা পরার আগে চিন্তাভাবনা করতে হবে। হাতাকাটা পরতে হলে অবশ্যই পুরো হাত ওয়্যাক্সিং করা আছে কি না, খেয়াল করুন। খেয়াল রাখতে হবে হাতের কনুইয়ের দিকে। অনেকের কনুই অনেক ভারী হয়ে যায় ও শেডিং পড়ে যায়। সেটা দূর করতে হবে।
হাতের সৌন্দর্য ঠিক রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলার কথাও বলেন এই রূপবিশেষজ্ঞ, বাইরে বের হওয়ার সময়ে অবশ্যই সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। টকদই, মধু আর হলুদ দিয়ে প্যাক বানিয়ে হাতে লাগালে উজ্জ্বলতা আসবে হাতে। সাবানে ভরসা না করে লোশন দিয়ে মালিশ করলে মসৃণ থাকবে ত্বক, সঙ্গে যোগ হবে শাইনি ভাব। কনুইয়ের কালো দাগ তুলতে স্ক্রাবিং করতে পারেন। চালের গুঁড়া, লেবুর রস ও একটু হলুদের গুঁড়া নিয়ে মালিশ করতে পারেন কনুইতে। ম্যানিকিউর করতে হবে ১৫ দিনে একবার।
হাতে মেদ থাকলে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। হাত লম্বা করে ক্লক ওয়াইজ ও অ্যান্টিক্লক ওয়াইজ ঘুরাতে পারেন ১০ বার করে। তাহলে আস্তে আস্তে হাতের গঠন সুন্দর হয়ে আসবে। হাতের গঠন ঠিক করতে পরামর্শ নিতে পারেন কোনো বিশেষজ্ঞের কাছ থেকেও। হাতের গঠনের পাশাপাশি নজর রাখুন গয়নার দিকেও। পোশাকের সঙ্গে চুড়ি পরব না ঘড়ি, তা নির্ভর করবে আপনার ওপরেই। দুটিতেই আলাদা সৌন্দর্য তৈরি হবে।
নিজের ব্যক্তিত্ব আর পছন্দ মিলিয়ে নিলেই হবে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো