আলমারি কথন
বাজারে কাঠ, স্টিল, প্লাইউড, প্লাস্টিক থেকে শুরু করে নানা ধরনের আলমারি পাওয়া যায়। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে পছন্দের আলমারি বেছে নিতে পারেন। পার্টেক্স, অটবি, রিগ্যাল, লেগাছি, ব্রাদার্স ফার্নিচারে পাওয়া যাবে ব্র্যান্ডের আলমারি। এগুলোতে কয়েক বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া চাইলে বানিয়েও নিতে পারেন শখের আলমারি। সে ক্ষেত্রে পছন্দমতো নকশাটি মিস্ত্রিকে ধরিয়ে দিলেই হলো। বাকি দায়িত্ব তিনিই পালন করবেন। কাঠ পাবেন কাঠের দোকানে। উত্তরা বা এর আশপাশে হলে দক্ষিণখান, কসাইবাড়িতে কাঠ পাওয়া যায়। বাড্ডা-রামপুরা মেইন রোডের দুই পাশেও রয়েছে কাঠের দোকান ও স-মিল। দোকান বা স-মিল থেকে কাঠ বাসায় নিয়ে এসে আলমারি বানানো ভালো। আর মিস্ত্রি নির্বাচন করতে হবে বুঝেশুনে। আগেভাগেই তাঁর মজুরি নির্ধারণ করে নিন। বাজারের কোনো আলমারির মডেল পছন্দ হলে তার ছবি মিস্ত্রিকে সরবরাহ করুন। কাঠ যদি শুকানো না থাকে তাহলে সময় নিয়ে তা শুকাতে হবে। কাঠ শুকানো না থাকলে পরে বেঁকে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। আলমারির কাজে ফিনিশিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভালোমতো ফিনিশিং না হলে আলমারিতে রাখা মূল্যবান কাপড়চোপড় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ জন্য তৈরির সময় ফিনিশিংয়ের ব্যাপারটা অবশ্যই ভালোমতো খেয়াল রাখতে হবে।
বাসা যদি ছোট হয় সে ক্ষেত্রে কেবিনেট আলমারি ব্যবহার করাই ভালো। ফ্লাটে বিল্ট-ইন কেবিনেটের ব্যবহার জায়গা সাশ্রয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। কেবিনেট আলমারি আলাদা কোনো আসবাব হিসেবে নয়, দেয়ালের মতোই ব্যবহার করা যায়। বিল্ট-ইন কেবিনেট আলমারি দেয়ালের ভেতরে বসানো হয়। এ জন্য আসবাবের জন্য আলাদা করে জায়গা বের করার প্রয়োজন হয় না। সিঁড়ি, বসার ঘর, খাবার ঘর, শোবার ঘরেও এ জাতীয় আলমারি ব্যবহার করতে পারেন। ডাইনিংয়ে ফ্লোর টু টুপ ওয়াল কেবিনেট আলমারি বানিয়ে নিতে পারেন। এর মধ্যে জুসবার, মাইক্রোওয়েভসহ নানা জিনিস তুলে রাখতে পারবেন। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আলমারির ওপরে লাইটিং ব্যবহার করতে পারেন। বেডরুমেও ফ্লোর টু টপ ওয়াল কেবিনেট আলমারি বানিয়ে নিতে পারেন। এতে পোশাকের পাশাপাশি লেপ, কম্বল, কাঁথা, বালিশ ইত্যাদি তুলে রাখতে পারবেন।
শখ করে পয়সা খরচ করে আলমারি বানিয়ে তাতে পোশাক-আশাক তুলে রেখেই কাজ সারা যাবে না। নিয়মিত আলমারির যত্নও নিতে হবে। আলমারির ভেতরটা যাতে স্যাঁতসেঁতে হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। আলমারির ভেতরে যাতে তেলাপোকা, ছাড়পোকাসহ অন্যান্য পোকা-মাকড় বাসা বাঁধতে না পারে সে জন্য নিয়মিত আলমারির ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। পোকা এড়াতে আলমারির ভেতরে ন্যাপথলিন রাখতে পারেন। এতে যদি কাপড়ে গন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে তবে বিকল্প হিসেবে দারচিনি বা লবঙ্গ ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে আলমারির ভেতরে শুকনো নিমপাতাও রেখে দিতে পারেন। এতে পোকার ভয় কমবে। কাঠের আলমারিতে ঘুণ পোকার ভয় থাকে। এ জন্য আলমারির ভেতরে বার্নিশ বা কেরোসিন দিয়ে নিলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। মাঝেমধ্যে আলমারি খুলে ঘরের ফ্যান চালু করে দিন। এতে আলমারির ভেতরে বাতাস ঢুকে কাপড়চোপড়কে ভ্যাসপা গন্ধ থেকে রেহাই দেবে।
সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ