ক্যাজুয়াল ব্লেজার
ট্রেন্ড আসা-যাওয়া করে বছরের প্রতিটি মৌসুমে। কিন্তু সব ফ্যাশনে পাল্লা দিয়ে চলাও তো মুশকিল। কিন্তু এই এক ট্রেন্ড যা প্রাচীনতম তবে আধুনিক। ওয়েস্টার্ন কালচারের ট্রেন্ডি আউটফিটটিতে সময়ের তালে তালে এসেছে নতুনত্ব। ইউথদের ভীষণ পছন্দের আউটফিটটি অফিস এবং পার্টিতে আনে ক্যাজুয়াল লুক।
শীত ফ্যাশনের মৌসুম এলেই ক্যাজুয়াল ব্লেজারে নিয়ে আসে নানা ফিউশন। তাই তো তারুণ্য স্টাইলিশ আউটফিট হিসেবে বেছে নেন ক্যাজুয়াল ব্লেজার। বরাবরের মতোই এবারের শীতেও বাজারে এসেছে নানা ডিজাইনের ব্লেজার। স্লিম ফিটেড ওয়েস্ট কম্বিনেশনের এসব ব্লেজার চার্মিং লুক নিয়ে আসবে সহজেই।
ফ্যাশন ডিজাইনার এবং প্লাস পয়েন্টের কর্ণধার বিপুল ইসলাম জানালেন ব্লেজার আউটফিটের সাত সতেরো। তিনি বলেন, ‘শীতে ওয়েস্টার্ন আউটফিট মানেই ট্রেন্ডি লুক। তবে, সব আউটেম নিয়ে তো আর মাতামাতি চলে না। ফ্যাশন ট্রেন্ডে বড় বিষয় হলো ফ্যাশনেবল এবং ওয়ারেবল। যা ব্যক্তিগত স্টাইলের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে যায়। ক্যাজুয়াল ব্লেজার এই এক ট্রেন্ড যা প্রাচীনতম তবে আধুনিক।’
বাজার ঘুরে দেখা গেল ব্লেজারের হালচাল। কাপড়, কাটছাঁট, বেতাম, রং সব মিলিয়ে ক্যাজুয়াল এই আউটফিটে লেগেছে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া। একটু চার্মিং লুক আনতে গ্রাফিক কোনো টি-শার্টের ওপর চাপিয়ে নিলেই হলো। জিন্স, চিনো প্যান্টস এমনকি জগার; সব ওয়্যারেই বেশ মানিয়ে যায় এসব ব্লেজার। পায়ে থাকুক বুটস বা লোফার।
ব্লেজার মানেই পুরোদস্তুর পার্টি লুক নয়, ক্যাজুয়ালেও মানাবে বেশ। ব্লেজার এখন মেয়েদেরও পছন্দের আউটফিট। একটা কালারফুল ব্লেজারের সঙ্গে সাদা গ্রাফিক টি-শার্ট কিন্তু চমত্কার দেখাবে। সঙ্গে সাদা স্নিকারও পরে নিতে পারেন। স্ট্রিট স্টাইল লুকের জন্য জুতসই। এ ছাড়া মাস্টার্ড ইয়েলো টপ আর ফ্রেইড জিন্সের সঙ্গেও পরা যেতে পারে এসব ব্লেজার। পায়ে থাকুক কালো প্ল্যাটফর্ম স্যান্ডেল। একইভাবে শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজেও চাপিয়ে নিতে পারেন শর্ট ব্লেজার।
বাজারে রয়েছে নানা রকমের ব্লেজার। নানা ফিউশন আর ডিজাইনে তৈরি করা হচ্ছে হয়েছে এসব ব্লেজার। অফিস, পার্টি কিংবা যে কোনো জায়গায় বেড়াতে ক্যাজুয়াল ব্লেজারের কদর তারুণ্যের কাছে অনেক বেশি। ফেব্রিকস, কাটছাঁট, বোতাম, রং ইত্যাদি বিষয়ে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া লেগেছে ব্লেজারে। ওভেন, ভেলভেট, ডেনিম, খাদি, মখমল ছাড়াও শত ভাগ কটন কাপড়ের ব্লেজার বেশ চলছে। আবার কটনের সঙ্গে ৩০ বা ৩৫ শতাংশ ভিসকস, পলিয়েস্টার বা অন্য কোনো কাপড়ের মিশ্রণ করা ব্লেজারও বেশ জনপ্রিয়। একের ভিতর দুই অর্থাৎ অফিসে পরা যায় আবার বাইরে কোনো পার্টিতেও ঠিকঠাক মানিয়ে যায় বলে ফ্যাশনেও আসে নানা বৈচিত্র্য। তা ছাড়া সাইড ওপেন এবং পেছনে ওপেন এমন ক্যাজুয়াল ব্লেজারের চল বেশি। যোগ হয়েছে লোয়ার রাউন্ড এবং স্কয়ার কাট। নিচের অংশে দুটি পকেট ছাড়াও নিচের কালো রঙের জায়গায় এখন নীল, লাল, হলুদ, মেরুন, কমলাসহ নানা রঙের রাজত্ব চলছে। আছে হ্যান্ড স্ট্রিচ অ্যাম্ব্রয়ডারি, টপসিন, বেনকলার, শার্ট কলার, একরঙা, স্ট্রাইপ, ছোট-বড় চেকসহ অসংখ্য ডিজাইন। কিছু কালো, মেরুন, অ্যাশ রঙের ব্লেজার তৈরি করা হয়েছে পলিউল বা উইন্টার ফেব্রিকে।
ব্লেজারের ফ্যাশনে স্লিম ফিট এখন ট্রেন্ড। দুই বা তিন বাটনের ব্লেজার সব সময়ই চলছে। এক বাটনের ব্লেজারও বেছে নিচ্ছেন অনেকে। নিচে রাউন্ড শেপটাই এখন সবার পছন্দ। মোটা হলে এক বোতাম, চিকন ও মাঝারি গড়ন হলে দুই-তিন বোতাম দিয়ে ব্লেজার পরলে ভালো মানাবে। রয়েছে পাঁচ বোতামেরও, আবার কোনো কোনো ব্লেজারে করা হয়েছে জিপারের ব্যবহার। উচ্চতা কম হলে স্ট্রাইপ ব্লেজার পরা ভালো। যাদের উচ্চতা বেশি, তাদের জন্য এক রঙের চেক ব্লেজার বেশি মানানসই।
অনেকে ব্লেজার বানিয়ে পরতে পছন্দ করেন। কেননা, স্টাইলিশ আর সঠিক আউটফিটের জন্য দার্জিবাড়ি বেস্ট। এক্ষেত্রে কিছু অভিজ্ঞতা না থাকলেই নয়। স্বাভাবিক গড়নের একটি ব্লেজার বানাতে সাধারণত ২ গজ কাপড় লাগে। এক্ষেত্রে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা দামের কাপড় পাওয়া যাবে।
এগুলোর মধ্যে চীনা ও ভারতীয় কাপড়ই বেশি। ব্লেজার বানানোর মজুরি গুনতে হবে ৩৫০০ থেকে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত। কাজের মান ও জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে মজুরি কমবেশি হতে পারে।
তাই আজই নিতে পারেন সিজনের ট্রেন্ডি এই আইটেম। বসুন্ধরা, যমুনা ফিউচার পার্ক, সায়েন্স ল্যাব, নিউমার্কেট ছাড়াও ইনফিনিটি, রিচম্যান, লুবনান, আর্টিস্টি, ফ্রিল্যান্ড, একস্ট্যাসি, ইজি, প্লাস পয়েন্ট, ক্যাটস আই, ট্রাস্ট মার্ট, ব্র্যান্ড কিউ, স্মার্টেক্সসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে পাবেন এই আউটফিট ক্যাজুয়াল ব্লেজার।
সূত্র- দৈনিক বিডি প্রতিদিন
ছবি-সংগৃহীত