গাছ দিয়ে ঘর সাজান

গাছ দিয়ে ঘর সাজান

ঘর সাজাতে শোপিস, ছবির ফ্রেম, পুতুল, ঝালরের পাশাপাশি ইনডোর প্ল্যান্টসও জায়গা করে নিয়েছে। এখন গাছ দিয়েও বিভিন্ন ঘর, বারান্দা, ছাদ সাজানো যাচ্ছে বেশ পরিপাটি করেই। কনক্রিটের এই ব্যস্ত নগরে আপনার অন্দরটি যদি হয় সবুজে ঘেরা, তা হলে আর মন্দ কী।

 

গাছ দিয়ে ঘর সাজালে শুধু সৌন্দর্যই নয়, রুচিশীলতা প্রকাশ পায়। অন্দরের কদর বাড়ে। আবার ঘরে গাছ থাকলে নানা উপকারও মেলে। গাছ মানুষের বন্ধু। কিছু গাছ ঘরে রাখলে দূষিত বাতাস শোষণ করে নেয়, অক্সিজেন সরবরাহ করে, ঘরের তাপ কমায়। এমন অনেক স্বাস্থ্যকর উপকার গাছ আমাদের দিয়ে থাকে। তার সঙ্গে সাজসজ্জার চাহিদা পূরণ করেই। জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ঘুরে জানা গেল ক্রেতারা ঘর সাজানোর গাছই বেশি কিনছেন। বিশেষ করে ক্যাকটাস, লাকি ব্যাম্বু বা ড্রেসিনা, অ্যাগলোলিমা, বনসাই, সিনাক্স প্ল্যান্ট, বিভিন্ন লতানো গাছ, এয়ার প্ল্যান্ট আর অর্কিড রয়েছে পছন্দের তালিকায়।

 

ক্যাকটাস-

পানি কম হলেও দিব্যি বাঁচতে পারে ক্যাকটাস। এ গাছের আয়ু অনেক দিন হয়ে থাকে। ৭-১০ দিন পর পর পানি দিলেও হয়।

 

লাকি ব্যাম্বু-

এর আরেক নাম ড্রেসিনা। ঘরের আবহাওয়ায় বেঁচে থাকতে পারে। মাটি ও পানি দুভাবেই রাখা যায়। মাটিতে রাখলে মাটির সঙ্গে পাথর ছড়িয়ে রাখতে হয় আর পানিতে রাখলে পাত্রে পানি দিয়ে রাখতে হয়। প্রতি তিন দিন পর পর পানি বদল করতে হবে।

 

অ্যাগলোলিমা-

ঘরে থাকতে পারে। এমনকি এয়ার কন্ডিশনের মধ্যেও এ গাছ টিকে থাকতে পারে জানান বৃক্ষমেলার ব্র্যাক নার্সারির একজন বিক্রেতা সাইদুর রহমান।

 

এয়ার প্ল্যান্ট-

বারান্দায় ছোট ছোট টব বা হ্যাঙার দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা গাছগুলোকে এয়ার প্ল্যান্ট বলা হয়। এগুলো সাধারণত ছোট-মাঝারি ধরনের হয়।

 

বনসাই-

বনসাই দেশি-বিদেশি দুটোই হয়। ছোট-বড় নানা আকারের বনসাই পাওয়া যায়। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন গাছকে বনসাই বানিয়ে নেন।

 

সিনাক্স প্ল্যান্ট-

সপ্তাহে একদিন পানি দিতে হয় সিনাক্স গাছকে।

স্টিক-

পানিতে রেখে পরিচর্যা করতে হয় এটিকে। ফিল্টার পানিতে রাখলে এক মাস পর পানি বদল করতে হয়, আর অবিশুদ্ধ পানিতে রাখলে ১৫ দিন পর পানি বদলে নতুন পানি দিতে হয়।

 

জিমিয়া ফ্লোরা, বেবি পাইন-

ঘাসের মতো দেখতে এ গাছটি মাঝারি আকৃতি।

ছোট পাইনগাছকে বেবি পাইন বলা হয়ে থাকে। দু-তিন দিন পর পর পানি বদল করতে হয় বেবি পাইনের জন্য।

 

সাইকাস পাম-

এ গাছের একটু বেশি যতœ নিতে হবে অন্য ঘরোয়া গাছের তুলনায়। একে জৈব সার দিতে হবে। আর বর্ষার সময়ে পানি দিতে হবে বলছিলেন বরিশাল নার্সারির বিক্রেতা মো. ইব্রাহিম।

 

লতানো গাছ-

লতানো গাছের মধ্যে আছে গ্রিন লিফ, হয়া, লিপস্টি, ব্রোমেলিয়া, হারপোজিয়াসহ বিভিন্ন ছোট-বড় এয়ার প্ল্যান্ট।

 

অর্কিড-

অর্কিডের মধ্যে ২৫ ঘরানার প্রজাতি রয়েছে। অর্কিডে পানি ও সার মিশিয়ে স্প্রের সাহায্যে প্রয়োগ করতে হয়। ডেনন্ড্রোরিয়াম অর্কিডের মধ্যে আছে সাদা, রেডবুল, সাকুলা পিংক, সনিয়া, কুল্টানা ব্লু, রুবি, মিস সিংগাপু। মোকারা অর্কিডের মধ্যে আছে ইয়োলো অ্যানি, রবিন, লোরা ব্লু, ক্যারল পিংক (হালকা বেগুনি)। ভ্যান্ডা অর্কিডের মধ্যে আছে ফ্র্যাগেন্টস (হালকা ঘ্রাণযুক্ত), সান রে (কমলা), হলুদ, লাল, গোলা। ক্যাটালিয়া অর্কিডের মধ্যে আছে হাতাই (হলুদ), হার্টসন (গোলাপি), আন্না (সাদা ও গোলাপি), লুক্টানি (লাল), ইয়োলো পিংক। লিটল স্টার অর্কিডের মধ্যে আছে একলান্ডিয়া, ইয়োলো বার্ড, হিডেনগোল্ড (গোল্ডেন ও হলুদ)।

 

দামদর-

ক্যাকটাস ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা, লাকি ব্যাম্বু বা ড্রেসিনা ৩০০ থেকে ২ হাজার, অ্যাগলোলিমা ৬০০ থেকে ৮০০, বনসাই ছোট ৪০০, বড় ১০ হাজার টাকা। আর অর্ডার করে বানাতে চাইলে আকৃতি, গাছ, ডিজাইনভেদে ৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পড়বে। বনসাই চাইনিজ বট ৫০০ টাকা, বল কামিনী ৪০০, এডোনিয়াম ৩০০ থেকে ১০ হাজার, এয়ার প্ল্যান্ট ২৫০ থেকে ২ হাজার টাকা। লতানো গাছের মধ্যে গ্রিন লিফ ২০০, হয়া ২৫০, লিপস্টিক ৩০০, ব্রোমেলিয়া ২৫০, হারপাজিয়া ১ হাজার, সিনাক্স প্ল্যান্ট ছোট ৭০০ টাকা আর বড় ১ হাজার টাকা। বেবি পাইন ৬০০, জিমিয়া পাম (ঘাসের মতো) ছোট ৫ হাজার টাকা আর বড় ৫ হাজার টাকা। সাইকাস পাম ৪০০ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ধাঁচের অর্কিড পাওয়া যাবে ৪০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকার মধ্যে।

 

কোথায় পাবেন-

আগারগাঁও, ডেমরা, গুলশান ব্র্যাক নার্সারি, আড়ংয়ের পেছনে যে কোনো বৃক্ষমেলা। এছাড়া গাজীপুর, শ্রীপুর, মানিকগঞ্জ, ভালুকাসহ দেশের যে কোনও নার্সারিতে।

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়

ছবিঃ সংগৃহীত