চোখের সাজ
পাশ্চাত্যের রূপসজ্জায় এই ধারা চলছে এখন। সামনে আসছে শীত ও বসন্ত। এই দুই ঋতু ধরেই সাজে আসছে বেশ পরিবর্তন। উৎসব আর দাওয়াতের কমতি থাকবে না শীত-বসন্তে। প্রসাধনী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি পিছিয়ে নেই ফ্যাশন শোর আয়োজনও। পোশাক কিংবা জুতা—যে বিষয়ের ওপরই র্যাম্প নির্দিষ্ট হোক না কেন, মেকআপ সেখানেও মনোযোগ কাড়ছে। কারণ, গতানুগতিক ধারার বাইরে বেশ কিছু সাজ নিয়ে তৈরি ফ্যাশন-দুনিয়া। চোখের সাজটাই সেখানে প্রধানত আলোচিত। আইশ্যাডোর রং, ব্যবহারে কখনো মুগ্ধ হবেন আবার কখনো ধাক্কা খেতে পারে আপনার চোখ।
এই সময়টাতে ম্যাট ফাউন্ডেশন বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন রূপ বিশেষজ্ঞ ফারজানা মুন্নী। মুখে ফাউন্ডেশন দেওয়ার আগে প্রাইমার লাগাতে হবে। এই প্রাইমার দিয়েই দুটি কাজ হয়ে যাবে। ত্বক ময়েশ্চারাইজড করা ও অনেকক্ষণ ত্বকে মেকআপ ধরে রাখতে পারে প্রাইমার। ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন এরপর। প্রাইমারের জন্য মিশেও যায় ভালোভাবে। বিউটি ব্লেন্ডার ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করবে। পরের ধাপ কনট্যুরিঙের। ত্বকের চেয়ে দুই ধাপ গাঢ় শেড ব্যবহার করে কনট্যুরিং করতে হবে। পাউডার লাগিয়ে এক মিনিটের মতো অপেক্ষা করুন। এবার পাউডার ঝেড়ে ফেলে মেকআপ বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে চেপে চেপে বসিয়ে দিন। এবার আসুন চোখে। চোখের নিচে, নাকে, থুতনিতে ও কপালে কনসিলার ব্যবহার করুন। চোখের সাজ ও ব্লাশঅন দেওয়া শেষ হলে সেটিং স্প্রে ব্যবহার করুন। এতে বাইরে বেরিয়ে গরমে ঘামলেও মেকআপ সরে যাবে না।
চোখের নিচে কাজলের বদলে আইশ্যাডোকখন কোন আইশ্যাডো মানাবে, তা বুঝে নিতে হবে। দিনের বেলায় বাঙ্গি, হালকা গোলাপি, হালকা বাদামি রঙের আইশ্যাডোগুলো বেশ মানাবে। দিনের সময়টাতে চোখ স্মোকি করার দরকার নেই। যেকোনো একটা রঙের আইশ্যাডো, হাইলাইটার দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। চাইলে আইলাইনার আর পানিরোধী মাসকারা লাগাতে পারেন। এটাই দিনের বেলার জন্য যথেষ্ট।
যদি ন্যাচারাল লুক চান, তবে বাদ দিন আইলাইনার। মাসকারার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। আইল্যাশ কার্লার দিয়ে চোখের পাপড়ি কোঁকড়া করে নিন মাসকারা দেওয়ার আগে। তারও আগে অর্থাৎ আইল্যাশ কার্লার ব্যবহার করার আগে চোখের নিচে ভেতরের অংশে ন্যুড বা সাদা রঙের কাজল লাগাতে পারেন। চোখ দেখতে বড় ও সতেজ লাগবে। রাতে গাঢ় বা রঙিন আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন। গ্লিটারযুক্ত আইশ্যাডো এখন বেশ জনপ্রিয়। শুধু এর ব্যবহারেও চোখে ভিন্নতা চলে আসবে। যেকোনো একটা রং দিয়ে বাদামি আইশ্যাডোর সঙ্গে মিশিয়ে নিন। চাইলে চোখের ওপর আইলাইনার না দিয়ে কাজল আর আইশ্যাডো ভালোভাবে ব্লেন্ড করে স্মোকি ভাব আনতে পারেন। বেশি করে মাসকারা লাগাতে পারেন, ব্যস শেষ আপনার রাতের সাজ।
।
কালো রঙের আইলাইনার দিয়ে নাটকীয়ভাবে চোখ এখন আর আঁকা হয় না। কাজলও তেমন দেখা যাচ্ছে না। তবে চোখের ওপর ও নিচে আইশ্যাডো দিয়ে চোখ সাজিয়ে তুলতে পারেন ইচ্ছেমতো।
গ্লিটারে নাটকীয়তা-
যেদিকে তাকাবেন, ঝলমলে পরিবেশই খুঁজে পাবেন। কারণ, চোখের ওপর, নিচ ও চারপাশে পরা হচ্ছে ছোট পাথর আর সিক্যুইন। ধৈর্য এখানে সহায়তা করবে চোখ সাজাতে।
আইশ্যাডো ব্যবহার করে করা হয়েছে গ্রাফিক্যাল নকশা
নকশায় গ্রাফিক-
গ্রাফিকাল নকশা করা হচ্ছে আইলাইনার ও আইশ্যাডো দিয়ে।
সোনালি আভা-
চোখের ওপর সোনালি হাইলাইটার উজ্জ্বলতা ধরে রাখবে আগামী বেশ কয়েক বছর।
চকচকে চোখ-
আইশ্যাডোর রং যেটাই হোক, চকচকে ভাব থাকবে। তবে সেই চকচকে ভাবেও থাকতে হবে নমনীয়তা। পুরো চোখের ওপর সোনালি কিংবা রুপালি রঙের আইশ্যাডো নিয়ে এসেছে মেটালিক ভাব। ২০১৭ সালেও এই ধারা ছিল। তবে এ বছর আরও বেশি জমকালোভাবে ফিরে এসেছে এটি।
ভারী আইল্যাশ চলবে আরও কিছুদিন
ঘন আইল্যাশ-
রেট্রো ভারী স্টাইলের আইল্যাশ ফিরে এসেছে ফ্যাশনে। শুধু ওপরের অংশে নয়, নিচের অংশের আইল্যাশও ভারী দেখানোর জন্য মাসকারার ব্যবহার বেড়েছে।
রঙিন চোখ-
চোখের ভাষা এখন হবে রঙিন। নীল রং নেতা হিসেবে কাজ করবে। এই রং দিয়েই চেহারায় ফুটে উঠবে প্রগতি, রহস্য ও হেঁয়ালিপূর্ণ আভাস। হালকা ও গাঢ় দুটি শেডই দেখা যাবে আইশ্যাডো, কাজল ও মাসকারার ব্যবহারে।
আইশ্যাডো-
এখন এক রঙের আইশ্যাডোর চল খুব। চোখের নিচেও কাজলের পরিবর্তে আইশ্যাডো দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। চোখের ওপর-নিচে আইশ্যাডো আর পাপড়িতে মাসকারা—চোখের ভাষাই বদলে যাবে পুরোপুরি। কাট গ্রাস ট্রেন্ড চলছে চোখের মেকআপে। মাঝখানে হালকা রঙের আইশ্যাডোর ব্যবহার, দুপাশে একটু গাঢ় রং ভিন্নতা নিয়ে আসে।
মোটা ভুরুর ইশারায়-
ভুরু মোটা করা রাখার প্রচলন এ বছর থেকে বেশ জোরেশোরেই শুরু হয়েছে। ভুরু মোটা না থাকলে গাঢ় করে এঁকে নিতে পারেন।
রুপার ছোঁয়া-
চোখের ভেতরের দিকে রুপালি রঙের আইশ্যাডোর ব্যবহার থাকবে এ বছরেও। এটি চোখ বড় দেখাতে সহায়তা করে।
কী করবেন-
■ ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ২ শেড হালকা হতে হবে ত্বকের রঙের চেয়ে।
■ আইশ্যাডো ভালোমতো ব্লেন্ড করতে হবে।
■ আইশ্যাডো লাগানোর জন্য যথার্থ ব্রাশ ব্যবহার করুন।
■ প্রাইমার ব্যবহারের আগে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো