
বেশি চিয়া সীড খাওয়ার বিপদ
আজকাল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের অনেকের ডাইনিং টেবিল বা ব্রেকফাস্ট বাউলে জায়গা করে নিয়েছে ছোট্ট কালো দানা— চিয়া সীড। এই সুপারফুডে আছে ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ক্যালসিয়ামসহ অসংখ্য পুষ্টি। নিয়মিত ও পরিমিত চিয়া সীড খাওয়া শরীরের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি মাত্রাতিরিক্ত খেলে তৈরি হতে পারে নানা জটিলতা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, বেশি চিয়া সীড খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে—
হজমের ঝামেলা-
চিয়া সীডে প্রচুর ফাইবার থাকায় অতিরিক্ত খেলে দেখা দিতে পারে পেট ফাঁপা, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া। যাদের আগে থেকেই পেটের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বেশি।
পানিশূন্যতার সম্ভাবনা-
শুকনা চিয়া সীড শরীরে গিয়ে পানি শোষণ করে ফুলে ওঠে। ফলে শরীরের ভেতরে পানিশূন্যতার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তাই খাওয়ার আগে অন্তত ২০–৩০ মিনিট ভিজিয়ে নেওয়া সবচেয়ে ভালো।
ব্লাড সুগারের ওঠানামা-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হলেও অতিরিক্ত চিয়া সীড রক্তে শর্করা হঠাৎ কমিয়ে ফেলতে পারে। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করছেন, তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সাবধানতা জরুরি।
রক্ত পাতলা হওয়ার ঝুঁকি-
চিয়া সীডে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে কমিয়ে দেয়। ফলে ব্লাড থিনার জাতীয় ওষুধ খাওয়া রোগীদের জন্য এটি রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া-
যদিও খুব কম দেখা যায়, তবুও কারও কারও ক্ষেত্রে চিয়া সীড অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। এতে চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট বা গলা ফোলা দেখা দিতে পারে।
শ্বাসরোধের সম্ভাবনা-
শুকনা চিয়া সীড একসাথে বেশি খেলে পানি পেয়ে মুহূর্তে ফুলে ওঠে এবং গলায় আটকে যেতে পারে। এর ফলে শ্বাসরোধ পর্যন্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
তাহলে কতটুকু খাওয়া নিরাপদ ?
পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন ১–২ টেবিল চামচ (২০–২৫ গ্রাম) চিয়া সীড যথেষ্ট। এর বেশি খেলে শরীরে উপকারের বদলে অপকারই বেশি হতে পারে।
শেষ কথা
চিয়া সীড নিঃসন্দেহে একটি দারুণ পুষ্টিকর খাবার, তবে সব খাবারের মতোই এরও সীমা আছে। সঠিক পরিমাণে ও সঠিকভাবে (ভিজিয়ে) খেলে এটি আপনার ডায়েটকে আরও স্বাস্থ্যকর করে তুলবে। কিন্তু কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয় চিয়া সীড খাওয়ার ক্ষেত্রেও তাই।