 
                                                                    
                            শীতৈর পোশাক এবং সাজসজ্জা
শীত এসেছে। হালকা শীতের এই মৌসুমে উপযুক্ত পোশাক কেমন হবে ?
শীতের আগমন বলে কথা। তাই পোশাকেও খোঁজা হচ্ছে একটু উষ্ণতা। গরমের আরামদায়ক পোশাক ভাবনায় থেকে সরে এসে প্রাধান্য পাচ্ছে সামান্য মোটা, কয়েক পরতবিশিষ্ট পোশাক অথবা পাতলা উলেন বা লিনেন পোশাক। স্টাইলটাও হবে আপডেট। তরুণীদের চাহিদাকে মাথায় রেখে ট্রেন্ড ও আবহাওয়া উপযোগী এসব পোশাকের সম্ভার সাজিয়ে বসেছে এখনকার ফ্যাশন হাউসগুলো।

টপস জিন্স পুরো বছরের সঙ্গী হতে বাধা নেই। তবে হালকা শীতে উষ্ণতার ছোঁয়া পেতে এই মৌসুমে সবচেয়ে উপযোগী হবে লম্বা হাতার শ্রাগ। তবে এগুলো পাতলা কাপড়ে তৈরি হলে পরে আরাম পাবেন। পুরু হলে হালকা উষ্ণ থাকার বদলে গরম ধরে যাবে। বাজারে এখন পাতলা গেঞ্জি কাপড়, লিনেন ভয়েল অথবা দু-তিন পরতের নেট আর জর্জেট কাপড়ের তৈরি শ্রাগ পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর ডিজাইনে পাবেন হরেক রকমফের। হালকা হালকা শীতে শ্রাগেরই যেন জয়জয়কার। কামিজ কিংবা পাশ্চাত্য পোশাকের ওপরে পরা যাবে অনায়াসে। এতে আপনার ফ্যাশন যেমন টিকে থাকে তেমনি প্রয়োজনও মেটে। যারা শ্রাগ পরতে চান না তাদের জন্য কটিই উপযুক্ত। ইদানীং মেয়েরা কটির প্রতি বেশ ঝুঁকেছেন। কামিজ অথবা ফ্রক ধরনের পোশাকের সঙ্গে এটি দারুণ মানিয়ে যায়। কুর্তিতেও কটি ভালো লাগবে বেশ। তবে কটি পরুন অথবা শ্রাগ পরুন, যদি ফুল হাতা পরতে না চান তবে হাফ অথবা সিভলেস তাদের জন্য উপযুক্ত। এতে করে আরাম পাবেন কিছুটা। বন্ধুদের আড্ডা, বেড়াতে গেলে, ক্লাস অথবা অফিসে এগুলো মানিয়ে যায় সহজে।
কটি শ্রাগের বাইরে হালকা শীতে আপনার সঙ্গী হতে পারে পাতলা সিল্কের তৈরি স্টাইলিশ শাল। জমকালো ভাব নিয়ে আসবে দাওয়াতের লুকে। জিন্স, টাইটস কিংবা সোজা কাটের প্যান্ট বা পালাজ্জোর সঙ্গে ভালো লাগবে। শীতকালে জিন্সকে বেশি প্রাধান্য দেন মেয়েরা। এক্ষেত্রে জিন্সের রং যেন টপস কুর্তি বা ফতুয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাটা জরুরি। অথবা জিন্সের তৈরি শার্ট টপস বেছে নিতে পারেন। গেঞ্জি কাপড়ের তৈরি ফুল হাতার টি-শার্টও বেশ নজরকাড়া হয়।
পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাথায় শর্ট স্কার্ফ পেঁচিয়ে রাখতে পারেন। এতে হালকা শীতের কুয়াশা থেকে যেমন বাঁচা যাবে তেমনি চুলও ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাবে। তাই তো পোশাকের সঙ্গে স্কার্ফের রঙের মিল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে।

শীতের এই সময়টাতে ট্রেন্ডি শালগুলো খুব পছন্দনীয় হয়ে ওঠে মেয়েদের কাছে। অনেকে ওড়নার পরিবর্তে এটি ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে যাদের অফিসে, ক্লাসে বা বাসায় বেশির ভাগ সময় এসিতে থাকতে হয় তারা কান-মাথা পেঁচিয়ে নিতে এটি ব্যবহার করতে পারেন। এই সময় লং জার্নিতেও পাতলা শালগুলো উপকার দেয়।
সময়টা এখন শীতের আগমনী। এই সময় খুব বেশি চিন্তা ভাবনা না করেই পোশাকের জন্য যে কোনো রং বেছে নিতে পারেন। কারণ গরম ধরার কোনো ভয় থাকে না। তাই তো শীতকালকে রঙিন পোশাক পরার মৌসুম হিসেবেও ধরা যায়। তা ছাড়া রঙিন কাপড়ে প্রায় সবাইকে আকর্ষণীয় দেখায়। আপনিও এই শীতে গাঢ় রঙের কাপড় পরিধান করতে পারেন। রং বাছাইয়ের ক্ষেত্রে হতে পারে কালো, সবুজ, ঘিয়ে, খয়েরি, লাল, সবুজ বিভিন্ন রঙের পোশাক।
যারা সারা বছর গরমের ভয়ে পুরু কাপড়ের কামিজ অথবা গাউন, ফ্রক আলমারিতে তুলে রেখেছিলেন সেগুলোও নামিয়ে নিতে পারেন অনায়াসে। খুব পছন্দের পোশাকটিও গরমের কারণে এতদিন পরতে পারেননি, সেগুলো পরার উপযুক্ত সময় এখনই। এগুলো যেমন আরাম দেবে তেমনি শখের পোশাকটি পরতে পেরে খুশিও হবেন। কেউ কেউ তো গরমের অজুহাতে শাড়ি পরতে ভয় পান। এখন যে কোনো অজুহাতে শাড়িতে হয়ে উঠুন শৈল্পিক। শুধু কী তাই, শাড়ির সঙ্গে নির্দ্বিধায় পরতে পারেন চুড়িদার হাতার ব্লাউজ। হালকা শীতের এই আবহাওয়াতে পোশাক নির্বাচন এমন হওয়াই ভালো যেটা উষ্ণতা দেবে আবার পাশাপাশি মানানসই ও আধুনিকতা বজায় রাখবে।

হালকা শীতের এই সময়ে সাজগোজ নিয়েও খুব বেশি ভাবনা চিন্তার দরকার হয় না। এ পোশাক উপযোগী সাজ হতেই পারে আপনার। মেকআপ গলে যাবে, ভারি গয়নায় অস্বস্তি ধরাবে অথবা জুতার ক্ষেত্রে খোলামেলা হতে হবে, এমন চিন্তার কিন্তু অবকাশ নেই। কোনো চিন্তাকে তোয়াক্কা না করেই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে হাইনেকের জুতা, কেডস, কনভার্স পরতে পারেন। তবে রূপ-সচেতনতায় এই সময়টাতে ত্বকে রোদ লাগানো থেকে বিরত থাকা ভালো। বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। ত্বকের কন্ডিশন ঠিক রাখতে প্রতি তিন ঘণ্টা পরপর মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে আবার ক্রিম লাগাতে হবে।
নিজেকে একটু ফ্যাশনেবল দেখাক, আজকের দিনে তা কে না চায়! ফ্যাশন কখনো নির্দিষ্ট গণ্ডিতে থেমে থাকে না, মানে না কোনো নির্দিষ্ট নিয়মও। নিজস্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর স্বকীয়তার পাশাপাশি ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে যে কেউই চান হাল-ফ্যাশনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে। আবার অনেকে হাল-ফ্যাশনের বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী স্টাইল ধারণ করে যেন তৈরি করে নেন নিজের একটি ফ্যাশন। কিন্তু শুরুতেই জেনে রাখা প্রয়োজন ফ্যাশনের খুঁটিনাটি। কোন পোশাক আপনাকে মানাবে, কোন পোশাকে আপনি আরামবোধ করবেন, তা কেবল আপনিই ভালো বলতে পারবেন। তাই কোনো পোশাক ক্রয় করার আগে অবশ্যই সেটি আপনাকে মানায় কিনা তা পরখ করে দেখবেন। নিজের শরীরের গড়ন অনুযায়ী বেছে নেওয়া প্রয়োজন সঠিক লেন্থের জামাকাপড়। নিজস্ব ফ্যাশন স্টাইল যাই হোক না কেন, আপনাকে সবসময় চলতি ফ্যাশন ট্রেন্ডের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রইল স্টাইল স্টেটমেন্টের টিপস।
► সাদা কোনো পোশাকের সঙ্গে লেদারের জ্যাকেট, ব্লেজার কিংবা কালো রঙের কোনো সোয়েটার পরতে পারেন। এতে আপনাকে আকর্ষণীয় দেখাবে।
► লম্বা যে কোনো পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে স্কার্ফ এবং জুতা পরে নিন।
► আঁটসাঁট কোনো পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে লম্বা বুটওয়ালা জুতাও পরতে পারেন।
► চাইলে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে প্যান্টও পরতে পারেন। তবে এমন প্যান্ট পরুন যাতে পায়ের পুরোটাই ঢাকা থাকে।
► তার রং ও ডিজাইনের সঙ্গে মানানসই জুয়েলারি, ব্যাগ ও জুতা অবশ্যই আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। নইলে শুধু ফ্যাশনেবল ড্রেস পরে তার সঙ্গে বেমানান কোনো এক্সেসরিজ নিয়ে বের হলে গোটা ফ্যাশনটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
► নিজের পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে সবসময় মেকআপ নেওয়া উচিত। মেকআপ হতে হবে অবশ্যই সময় ও ঋতুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণও। কোন ড্রেসের সঙ্গে আপনি কী ধরনের মেকআপ করবেন, কীভাবে চুল বাঁধবেন তা অবশ্যই আপনার ফ্যাশনেবল লুকের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। তবে দিনের বেলায় হালকা মেকআপ করলেও রাতের বেলায় গাঢ় মেকআপ লুককে করবে অনন্যময়।
সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন
 
                                                                                             
                                                                                             
                                                                                             
                                                                                         
                            
                     
                                                                                         
                            
                     
                                                                                         
                            
                     
                                                                                         
                            
                     
                                                                                         
                            
                     
                                                                                         
                            
                     
                        
                         
                        
                         
                        
                         
                        
                        