রান্নাঘর ছোট হলেও, গুছিয়ে রাখুন !
ছোট রান্নাঘর সাজানোর সময় আগে থেকে একটু সচেতন হলে অনেক কিছু রাখা যায়। পরামর্শ দিয়েছেন আর্কিডেন ইন্টেরিয়রের ডিজাইনার সোহেলী সায়মা সেঁজুতি।
সুন্দর একটি রান্নাঘর রান্নার পূর্বশর্ত। আধুনিক ফ্ল্যাটে রান্নাঘরের পরিসর ক্রমেই কমে আসছে। তাতে রান্না ও রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাখতে ছোট রান্নাঘর হয়ে পড়ে গিঞ্জি। কোনো প্রয়োজনে দুজন একসঙ্গে কাজ করতেও অসুবিধা হয়। একটু সচেতনতা আর সামান্য চেষ্টায় ছোট রান্নাঘরও হতে পারে সুন্দর আর গোছানো। রান্নাঘর ছোট হলে প্রথমেই রান্নাঘরে রাখা এমন কিছু জিনিস বাইরে বের করে আনুন, যেগুলো রান্নাঘরে সব সময় না রাখলেও চলে। অনেকেই বাসায় রান্নাঘরে চাল, ডাল ইত্যাদি রাখার জন্য ড্রাম ব্যবহার করেন। রান্নাঘর যদি ছোট হয়, তাহলে ড্রাম রান্নাঘরে না রেখে দরজার এক পাশে কিংবা অন্য কোথাও রাখুন। ব্যবহূত ফ্রিজ, জুসার, ওভেন, বেলেন্ডার রান্নাঘরে না রেখে ডাইনিংয়ে রেখে দিন। এতে রান্নাঘরের জায়গা বাড়বে।
রান্নাঘরে কেবিনেট অনেক কাজের জিনিস। এ জন্য রান্নাঘরের ডিজাইন করার সময় ঘরটির প্রতি ইঞ্চি জায়গা বুঝে কেবিনেটের ডিজাইন করতে হবে। এতে জায়গা অপচয় কম হবে। কেবিনেটের ইউনিট করার সময় রান্নাঘরের বিভিন্ন সরঞ্জামের কথা মাথায় রাখতে হবে। ছোট রান্নাঘরের জন্য মডিউলার ইউনিট সবচেয়ে বেশি উপযোগী। এতে অল্প জায়গায় অনেক জিনিস রাখা যায়। ছোট রান্নাঘর সাধারণত এক দেয়ালবিশিষ্ট হয় অথবা ইংরেজি এল আকৃতির হয়। সে ক্ষেত্রে দেয়ালটিতে কেবিনেট বানিয়ে নিতে হবে। দেয়ালের এক পাশে পানির সিঙ্ক, তার পাশে কাটাকাটির জন্য জায়গা রাখতে হবে। অন্য যে পাশটি ফাঁকা থাকবে সেখানে চুলা বসিয়ে নিন। চুলার নিচের ফাঁকা জায়গা, সিঙ্ক ও কাটাকাটি কাজের নিচের পুরো অংশেও আলাদা আরেকটি কেবিনেট বানিয়ে নিন। রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী এই কেবিনেটে তুলে রাখুন। এতে রান্নাঘরের পরিসর কম হলেও অনেকটা ফাঁকা লাগবে।
রান্নাঘরের মেঝেতে টাইলস ব্যবহার করা ভালো। এতে রান্নাঘরে বারবার পানির কাজ করা হলেও সহজে স্যাঁতসেঁতে হবে না। রান্না শেষে মেঝে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। এরপর শুকনো কাপড় দিয়ে পুনরায় আরেকবার মুছে নেওয়া ভালো। রান্নাঘরে রঙের ব্যবহারেও পরিসরের কমবেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ছোট রান্নাঘর বড় দেখাতে উজ্জ্বল রং বেছে নিতে হবে। হালকা হলুদ, সাদা কিংবা ক্রিম রঙের লাইট রান্নাঘরে ব্যবহার করুন। রান্নাঘরে দেয়ালের এক পাশে লাইট না লাগিয়ে সম্ভব হলে চারপাশের দেয়ালে লাগিয়ে নিন। এক পাশে লাইট ব্যবহারে অন্য পাশে ছায়া পড়ে। ফলে রান্নায় বিঘ্ন ঘটতে পারে। তবে রান্নাঘরের ছাদের সঙ্গে একটি বড় লাইট লাগিয়েও এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ছোট রান্নাঘরের গরমের হাঁসফাঁস থেকে মুক্তি পেতে বাতাস বের করে দেওয়ার জন্য ওপরে একটি এগজস্ট ফ্যান লাগিয়ে নিন। ধোঁয়া বের করে দেওয়ার জন্য রান্নাঘরে যাতে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে সে জন্য একটি জানালার ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
রান্নাঘর ছোট হলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত হাঁড়ি-পাতিল না কেনাই ভালো। এখন বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কিচেন অর্গানাইজার পাওয়া যায়। এগুলোর একটিতেই একাধিক কাজ করা যায় এবং অনেক জিনিস রাখার সুবিধা পাওয়া যায়। প্রয়োজন বুঝে আপনার রান্নাঘরের জন্য কিচেন অর্গানাইজার কিনে নিতে পারেন। রান্না শেষে অবশ্যই প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখুন। রান্নাঘরে জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকলে বড় রান্নাঘরও ছোট দেখায়।
সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ
ছবিঃ সংগৃহীত