স্ট্রোক প্রতিরোধ করুন সহজে
প্রতিবছর স্ট্রোকের কারণে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অনেকে অসুস্থ হয়ে কর্মক্ষমতা হারায়। অথচ দেখা গেছে স্ট্রোক অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়। স্ট্রোক হয়ে গেলে সে ব্যক্তির এবং পরিবারের অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। তাই প্রতিরোধের দিকে সবার নজর দেওয়া দরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর ১৫ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ছয় মিলিয়ন মানুষ মৃত্যু বরণ করেন এবং পাঁচ মিলিয়ন মানুষ সারাজীবনের জন্য অক্ষম হয়ে পড়েন। মূলত স্ট্রোক আর হার্ট অ্যাটাক এক নয়। হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যা থেকে হার্ট অ্যাটাক দেখা দেয়। আর স্ট্রোক মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে সমস্যা হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। স্ট্রোক মূলত দুই ধরণের হয়ে থাকে। একটি ‘ইস্কেমিক স্ট্রোক’ যা মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধে এবং রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। আরেকটি হল ‘হেমোরেজ স্ট্রোক’ যার কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী শিরা ফুটো হয়ে মস্তিষ্কে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে। দুই ধরণের স্ট্রোক শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিছু কাজ আছে যা স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন-
সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের প্রয়োজন। প্রতিদিন কমপক্ষে ২০-২৫ মিনিট ব্যায়াম করুন। এটি সপ্তাহে পাঁচ দিন করুন। এটি স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেবে অনেকখানি।
আপেল রাখুন-
প্রচলিত আছে প্রতিদিন একটি করে আপেল খান আর ডাক্তার দূরে রাখুন। এই কথাটি স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়া স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে। এমনকি নাশপাতিও আপেলের মতো কাজ করে।
এক টুকরো ডার্ক চকলেট-
ডার্ক চকলেট স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডার্ক চকলেটে ফ্ল্যাভোনয়েড নামক উপাদান রয়েছে যা ধমনীতে রক্ত চলাচল সচল রাখতে সাহায্য করে। ডার্ক চকলেটে আরও আছে ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। সপ্তাহে কয়েকবার এক টুকরো ডার্ক চকলেট খান।
ওজন নিয়ন্ত্রণ-
অতিরিক্ত ওজন স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রয়োজনে ব্যায়াম, সঠিক ডায়েট অনুসরণ করুন।
রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান-
হার্ভাডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল নারীরা সাত ঘন্টারও কম ঘুমায় তাদের স্ট্রোক হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে। কম স্ট্রেস হরমোন বৃদ্ধি করে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে চিনির পরিমাণও বৃদ্ধি করে থাকে। সুস্থ থাকতে চাইলে ঘুমের সময় এক ঘন্টা বাড়িয়ে নিন। আট ঘন্টার পরিবর্তে নয় ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
সপ্তাহে একবার মাছ খান-
মাছ খেতে পছন্দ করেন না? এই মাছ আপনার স্ট্রোকে ঝুঁকি হ্রাস করবে। ২০০২ সালে প্রকাশিত ‘জার্নাল অব দ্য অ্যামেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের’ জরিপ অনুযায়ী, যারা সপ্তাহে একবার মাছ খেয়ে থাকেন তাদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকে মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় অনেকখানি।
লবণ কম খান-
প্রতিদিন ২৩০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাবেন না। তবে আপনার বয়স যদি ৫১ বেশি হয় তবে ১৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত লবণ এবং লবণ জাতীয় খাবার স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
ধূমপান ত্যাগ করুন-
ধূমপান স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। সুস্থ থাকতে চাইলে আজই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন।
সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়
ছবিঃ সংগৃহীত