ফাউন্ডেশনের কিছু কমন মিসটেক
আমরা সবাই কম বেশী ফাউন্ডেশন ব্যবহার করি। ত্বকের দাগ, ব্রন ঢাকতে এবং ত্বককে নিখুঁত করতে ফাউন্ডেশনের প্রয়োজন হয়।অনেক সময় কনসিলার দিয়েও মিডিয়াম কভারেজ এর কাজ করা যায়। তবে অন্যান্য মেকআপ প্রোডাক্ট এর চাইতে ত্বকের জন্য সঠিক ফাউন্ডেশন খুজে বের করা কিছুটা কষ্টকর। কখনো কখনো এটা সঠিক কালার দিবে না, কখনো এটা লাগানোর পর কেকি কেকি লাগবে এমন অনেক যন্ত্রনাও আছে। তাই ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে কিছু মিসটেক এড়িয়ে চলতে পারলেই এর থেকে দূরে থাকা যায়।
১. ফাউন্ডেশন হাতে/কবজিতে এবং ` জ ' লাইনে টেষ্ট করা-
আমরা অধিকাংশই ফাউন্ডেশন কেনার সময় হাতে/কবজিতে বা ‘জ’ লাইনে টোন ম্যাচিং করতে চাই, কিন্তু সত্যিকার অর্থে ‘জ’ লাইনে বা হাতে/কবজিতে টোন চেক করা সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। উচিত হলো সোয়াচ চোখের নিচে এবং আপার চিক এ চেক করা। যেহেতু বেশ টাকা খরচ করেই ভালো মানের ফাউন্ডেশন আমরা কিনতে যাই, তাই সঠিক টোন পেতে ম্যাচ করার এই কষ্টটুক নিতে হবে।
২. ভুল ফর্মুলেশন ফাউন্ডেশন বেছে নেয়া-
ভিন্ন ভিন্ন ত্বকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের উপাদান সমৃদ্ধ ফাউন্ডেশন প্রয়োজন হয়। অনেক বেশী তৈলাক্ত ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ ফাউন্ডেশন নির্বাচন করা যেমন ঠিক নয় তেমটি খুব ড্রাই স্কিনের জন্য ম্যাট ফাউন্ডেশনও সঠিক নয়। যদি আপনার ত্বকে ব্রনের সমস্যা থাকে, তাহলে `non comedogenic’ ট্যাগ চেক করে কিনুন। ম্যাচুউরড ত্বকের জন্য সিরাম সমৃদ্ধ ফাউন্ডেশন কিনুন।
৩. ফাউন্ডেশনের আগে কনসিলাল লাগানো-
অনেকেই ফাউন্ডেশন লাগানোর আগে কনসিলার লাগান। এর ফলে প্রথমে কনসিলার লাগানোর পরে যখন তার উপর ফাউন্ডেশন লাগাবেন, ব্লেন্ড করার পর কনসিলার ফেড হয়ে যাবে। তাই আগে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে তারপর দাগের জায়গাগুলোতে কনসিলার লাগান।
৪. ফাউন্ডেশনের আগে ময়েশ্চারাইজার না লাগানো-
আপনার ত্বক শুস্ক বা তৈলাক্ত যেমনই হোক না কেন, ফাউন্ডেশন লাগানোর আগে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিবেন তাহলে ত্বক ফাউন্ডেশন লাগানোর পর কেকি লাগবে না।তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ওয়াটার-বেসড ময়েশ্চারাইজার এবং ড্রাই স্কিনের জন্য হাইড্রেটিং ময়েশ্চারইজার বেছে নিবেন।
৫. ফাউন্ডেশন ঠিকমতো ব্লেন্ড না করা-
ফাউন্ডেশন ভালো ভাবে ব্লেন্ড করতে কিছুটা সময় ব্যয় করুন, সঠিক রঙের ফাউন্ডেশন না লাগানো এবং ভালো ভাবে ব্লেন্ড না করলে, চেহারার বাজে লুকের কারনে, আপনার ফাউন্ডেশন লাগানোর উদ্দেশ্যটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৬. দিন শেষে ভালো ভাবে ফাউন্ডেশন তুলে না ফেলা-
দিন শেষে ভালো ভাবে আপনার মেকআপ এবং ফাউন্ডেশন ঠিক ভাবে তুলে ফেলুন। মেকআপ তোলার জন্য ভালো একটি মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করুন যেন আপনার ত্বক ঠিক থাকে, আপনি নিশ্চই সকালে উঠে মুখে লালচে কিছু র্যাশ দেখতে চান না।
৭. ফাউন্ডেশন কে কনসিলার হিসেবে ব্যবহার করা-
অনেকে আছেন ফাউন্ডেশন কে কনসিলার হিসেবে ব্রনের দাগ, ব্লেমিশ ঢাকার জন্য ব্যবহার করেন, যা মুখের লুক টাই নষ্ট করে দেয়। যদি দাগ ভালো মতো ঢাকতে চান তাহলে মেকআপ ফরএভার HD হাই ডেফিনিশন ফাউন্ডেশনের মতো কোন ফাউন্ডেশন বেছে নিন।
৮. আর্টিফিশিয়াল লাইটে ফাউন্ডেশন টেষ্ট এবং ম্যাচিং করা-
কসমেটিকসের দোকানে আর্টিফিশিয়াল লাইট থাকে প্রোডাক্টগুলো আরো আকর্ষনীয় ভাবে তুলে ধরতে। কিন্তু আপনি যদি ফাউন্ডেশন কেনার প্ল্যান করে থাকেন তাহলে তাদের কাছে স্যাম্পল বা টেষ্টার চেয়ে নিন এবং ন্যাচারাল লাইটে চেক করার চেষ্টা করুন। আর যদি তারা কোন টেষ্টার দিতে অপারগ হয়, তাহলে আপনার মুখে ফাউন্ডেশন থেকে কিছুটা লাগিয়ে দিতে বলুন, তারপর বাইরে এসে ন্যাচারাল লাইটে শেড আপনার স্কিন টোনের সাথে ম্যাচ করছে কিনা দেখে নিন।
৯. অনলাইনে ফাউন্ডেশন কেনা-
অন্যান্য মেকআপ আইটেম অনলাইনে কিনলেও ফাউন্ডেশন কিনবেন না। অনলাইন ষ্টোরের থেকে শেড দেখে ফাউন্ডেশন কেনা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এক্ষেত্রে লাইট/ডীপ সমস্যায় পড়ে যেতে পারেন। তবে আপনার যদি সঠিক শেড জানা থাকে এবং সেই ব্রান্ডের ফাউন্ডেশনই পুনরায় কিনতে চান তাহলে অনলাইন থেকে কিনতে পারেন, যেহেতু আগে থেকেই আপনি এই শেড ব্যবহার করেছেন।
১০. গলায় ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড না করা-
গলায় যদি ফাউন্ডেশন না লাগান, তাহলে মুখে লাগানোও এড়িয়ে যান। কারন মুখে লাগানোর পর, গলায় না লাগালে মুখ এবং গলার স্কিন শেডের তারতম্য খুব চোখে লাগে এবং দৃষ্টিকটু মনে হয়।
আপনারও কোন ফাউন্ডেশন টিপস আছে কি আমাদের কে জানানোর জন্য, লগ ইন করে কমেন্টস বক্সে জানান।ধন্যবাদ।
ছবিঃ সংগৃহীত