চল্লিশ বছর বয়স থেকে যে খাবারগুলো খাবেন

চল্লিশ বছর বয়স থেকে যে খাবারগুলো খাবেন

তরুন বয়সে খাবারে বেহিসাবী হওয়া যায় অনায়াসেই, কৈশোর থেকে তরুন বয়সে খাদ্যরসিক থাকা যায় কারন এ সময় সব খাবারই সহজে হজম করা যায়। কিন্তু যখন বয়সটা ৪০ এর দ্বারপ্রান্তে চলে আসে তখন আমাদের শরীরের পরিপাক ক্রিয়ায় যে পরিবর্তন আসতে শুরু করে তার সাথে তাল মিলিয়ে খাদ্যাভাস গড়ে তোলা উচিত।

গবেষনায় দেখা গেছে, ৩০ বছর বয়স থেকে খাবার বার্ন করার শক্তি প্রতি ১০ বছরে ৭ শতাংশ হারে কমতে থাকে, তাই ২০ বছর বয়সে যা খেয়েছেন তাই যদি ৪০ বছর বয়সে এসেও খান, আগের মতো খাবার বার্ন না হওয়াতে আপনার ওজন অবশ্যম্ভাবী ভাবে বাড়তে শুরু করবে, যার ফলশ্রুতিতে কার্ডিওভাসক্যুলার ডিজেজ, ডায়াবেটিস এর ঝুকি বাড়াবে।

ভালো খবর হলো, কিছু খাবার আপনার অনাকাংখিত কোলেষ্টরেল লেভেল নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করবে, আপনার এনার্জীও বাড়াবে।

চলুন জেনে নেই তেমন কিছু খাবারের কথা-

ওটস-

ওটসে থাকা ফাইবার, বেটা গ্লুকেন, অ্যান্টি অক্সিডিন্ট আপনার ভালো কোলেষ্টরেল (এইচডিএল) এর পরিমান বাড়াবে যা খারাপ কোলেষ্টরেল কে নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করবে।

কিভাবে খাবেন: পরিজ তৈরি করে অথবা টকদই এর সাথে মিশিয়ে খান।

চেরী-

চেরী আমাদের দেশেও পাওয়া যায় এখন, এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গাউট এবং আর্থারাইটিসের জন্যে বেশ কার্যকর।

কিভাবে খাবেন: ১ ডজন চেরী খান অথবা বাড়তি কোন সুগার না দিয়ে চেরীর জ্যুস খান সপ্তাহে ৩/৪ বার। এছাড়া টকদই এর সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন।

আমন্ড-

গবেষনায় দেখা গেছে ২০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে প্রতিদিন ৬০ গ্রাম করে ৪ সপ্তাহ আমন্ড বাদাম খাওয়ানোর পর তাদের ব্লাড সুগার ৯ শতাংশ কমে গেছে। তাই বলা হচ্ছে, আমন্ড বাদাম কার্ডিও ভাসক্যুলার ডিজিজ এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।

কিভাবে খাবেন: শুধু আমন্ড বাদাম খান, তবে লবন নেবেন না কারন লবন আপনার ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিতে পারে।

তেল সমৃদ্ধ মাছ-

ওমেগা-৩ ফ্যাট সমৃদ্ধ মাছ হার্ট বিট রেট কমায়, ব্লাড প্রেশার কমায় এবং অনিয়মিত হার্টবিট এর ঝুঁকি নিয়ন্ত্রনে আনে।

ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার গুলো হলো স্যামস, টুনা, সার্ডিন এবং হেরিং মাছ। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল নারীরা ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ মাছ বেশী খান তারা স্ট্রোক এর ঝুঁকি কমাতে পারেন।

কিভাবে খাবেন- ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খুব বেশী তাপে রান্না করতে হয় না, এতে এর পুষ্টিগুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদেশে অনেকে কাঁচা মাছ কে সুশি আকারে খান, তবে আমরা যেহেতু কাঁচা খাইনা তা্ই স্বল্প তাপে রান্না করে খেতে হবে। সপ্তাহে ৪ বার ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

সয়াবিন-

সয়া বিনে থাকা ইসোফ্লাবোনস রক্তে কোলেষ্টরেল কমায়, নারীদের মনোপজের পরে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং পুরুষের ফার্টিলিটি বাড়ায়।

কিভাবে খাবেন- তাজা সয়াবিন খান অথবা বিভিন্ন সুপার স্টোরে ক্যানে পাওয়া যায় সেগুলো নির্দেশনা অনুয়ায়ী প্রস্তুত করে খেতে পারেন।সপ্তাহে সয়া বিন ২-৩ বার খেতে হবে।

টমেটো-

টমেটোতে আছে লাইকোপেন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা আর্টারি কে আর্থারসেলোসিস থেকে রক্ষা করে এবং ক্যানসার সেলের বৃদ্ধির বিপরীতে সুরক্ষা দেয়।

কিভাবে খাবেন- রান্না করে খাওয়া হলে লাইকোপেন শরীরে সহজে শুষে নিতে পারে, তাই রান্না করে খেলে বেশী ভালো, তাছাড়া টমেটো পিউরি, জ্যুস, সালাদ করেও খেতে পারেন।

ফুল মিল্ক-

ফুল ফ্যাট মিল্ক শরীরে বার্ধক্য রোধে বেশ কাজ করে। ফুল মিল্কে প্রতি ১০০ মিলি তে ১১৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

প্রতিদিন পুরুষের জন্যে ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং নারীদের জন্য ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের চাহিদা থাকে। প্রতিদিন সবুজ শাক-সবজি, বাদাম এর পাশাপাশি ফুল মিল্ক খেতে পারলে কার্যকর ভাবেই শরীরের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরন করা যায়।

কিভাবে খাবেন- নিয়মিত রাতে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। তবে অনেকে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরন করার জন্য ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করেন, কিন্তু মনে রাখতে হবে অনেক বেশী ক্যালসিয়াম গ্রহন করলে পুরুষদের প্রোষ্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।

মুরগী-

মুরগী প্রোটিনের ভালো উৎস। যদি মুরগী মাংস হিসেবে খেতে ভালো না লাগে, চিকেন স্যুপ করেও খেতে পারেন।

 

ছবিঃ সংগৃহীত