চুলের রুক্ষতা দূর করতে
রোদ, ধুলাবালি, অযত্ন চুলকে শুষ্ক করে ফেলে। এর ফলে চুল হয়ে পড়ে রুক্ষ এবং প্রাণহীন। রুক্ষ চুল কেবল হেয়ার স্টাইল করতে বা দেখতেই খারাপ লাগে না, চুল রুক্ষ হলে আগা ফেটে যায় এবং ঝরে যায়। ফলে চুলের ঘনত্বও কমে যায়। চুলের রুক্ষতা থেকে মুক্তি পেতে রূপ বিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা রীতা জানিয়েছেন বেশ কিছু পরামর্শ।
নিয়মিত তেল দিন-
নারকেল তেল খুব সহজেই আপনার চুলকে কোমল ও প্রাণবন্ত করবে। ভালো ফল পেতে একদিন অন্তর অলিভ অয়েল বা নারকেল তেলের সঙ্গে ক্যাস্টার অয়েল মিশিয়ে গরম করে পুরো চুলে ও স্কাল্পে লাগিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর গরম পানিতে তাওয়েল ভিজিয়ে চুলে পেঁচিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে কন্ডিশনিং করুন। তেল চুলের রুক্ষতা দূর করা ছাড়াও চুলের আগা ফাটা রোধ করবে, চুল ঝলমলে করবে।
ভিনেগার ব্যবহার করুন-
ভিনেগার চুলের রুক্ষতা দূর করতে ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি চুল ক্লিনিংয়ের কাজও করে। চুল ধোয়ার পর পানিতে কয়েক ফোঁটা ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এর পর সেই ভিনেগার মিশ্রিত পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
উপকারী আভাকাডো-
আভাকাডোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘ই’ আছে, যা আমাদের চুলের শুষ্কতা কমায়। আভাকাডোতে বিদ্যমান ওমেগা ও ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের রুক্ষতা কমায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। আভাকাডো চুলে ব্যবহারের জন্য কয়েকটি আভাকাডোকে থেঁতো করে তার মধ্যে অলিভ অয়েল মিশিয়ে ভালো করে চুলে এবং মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ডিপ কন্ডিশনিং-
খুব বেশি শুষ্ক চুল সাধারণভাবে কন্ডিশনিং করলেই যথেষ্ট নয়। এ ধরনের চুল সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনিং করুন। ১টা ডিম, ২ চা চামচ লেবুর রস, ২ চা চামচ মধু, ২ চা চামচ গ্লিসারিন খুব ভালো করে মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন। টকদইও রুক্ষ চুলের জন্য উপকারী।
চাই হেয়ারপ্যাক-
রুক্ষ ও শুষ্ক চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করতে সপ্তাহে দুদিন হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করুন। এক কাপ টকদই, একটি পাকা কলা ও এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করুন। এক ঘণ্টা পর চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহারে সতর্ক হোন-
অনেক সময়ই আমরা যে কোনো শ্যাম্পু কিংবা কন্ডিশনার দিয়ে চুলে ধুয়ে ফেলি। এটা ঠিক নয়। সব ধরনের চুলের জন্য আলাদা শ্যাম্পু, কন্ডিশনার রয়েছে। শুষ্ক চুলের জন্য মাইল্ড ও হার্বাল শ্যাম্পু উপযোগী। যাদের চুল খুব বেশি রুক্ষ তারা সিল্কি পোরসান বা লিভঅন জাতীয় কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এই কন্ডিশনার লাগানোর পর চুল আর ধোবেন না। বরং চুল ধোয়ার পর হালকাভাবে মুছে ভেজা চুলেই লাগিয়ে নিন। তার পর চুল আঁচড়ান, এতে চুল ছিঁড়বে না, রুক্ষতাও কমবে।
হেয়ার ড্রায়ার এড়িয়ে চলুন-
প্রতিদিন হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকালে চুল রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই হেয়ার ড্রায়ার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন। চুল ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে কিছুক্ষণ পেঁচিয়ে রাখুন। এতে চুল নরম থাকবে এবং পানিও শুকিয়ে যাবে। কিছুক্ষণ পর তোয়ালে খুলে ফেললে বাতাসে অল্প সময়েই চুল শুকিয়ে যাবে।
সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়