গরমে আরাম সুতির পোশাকে

গরমে আরাম সুতির পোশাকে

অনেকের ধারণা সুতি কাপড়ের পোশাকে নিজেকে স্টাইলিশভাবে উপস্থাপন করা যায় না। আসলে ধারণাটা ভুল। তির পোশাকের সুবিধা, মানিয়ে যায় সব জায়গাতেই। অফিসে, পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গেলে ফ্যাশনেবল হয়ে ওঠা যায় ভিন্ন ধাঁচের সুতি পোশাকেও। আবার এ পোশাকের নকশায় সহজেই ফুটে ওঠে দেশজ ঐতিহ্য আর হাল ফ্যাশনের আধুনিকতা।

 

সুতি পোশাক কেন?
বিশেষজ্ঞরা জানালেন, সুতি পোশাক আরামদায়ক, সহজেই ঘাম শুষে নিতে পারে। কৃত্রিম তন্তুর তৈরি পোশাক সেভাবে ঘাম শোষণ করতে পারে না। আবার খাদি কাপড় সুতি হলেও সেটি মোটা। তবে বিবি রাসেল জানালেন, হাতে তৈরি মোটা খাদি আরামদায়ক। এর শোষণক্ষমতা ভালো। বাংলাদেশে পাতলা খাদি তৈরির যন্ত্র নেই।
দেশালের ডিজাইনার ইশরাত জাহান জানালেন, সুতার কাউন্ট যত বেশি হয়, কাপড় তত পাতলা হয়। তবে কাপড়ের এক ইঞ্চিতে যতটা সুতা থাকে (সানা), তার ওপরও কাপড়ের পুরুত্ব নির্ভর করে। সানা যত বেশি হয়, কাপড় তত পুরু বা মোটা হয়।

 

মডেল: শাহ্‌তাজ, সাজ: বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ, পোশাক: বিবি প্রোডাকশনস, ছবি: কবির হোসেন

মডেল: শাহ্‌তাজ, সাজ: বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ, পোশাক: বিবি প্রোডাকশনস, ছবি: কবির হোসেন

 

আরও সুতি পোশাক-
দেশাল, সাদাকালো, নিপুণ, সৃষ্টি, বাংলার মেলা, অঞ্জন’স, বিবিয়ানা, অরণ্য, তাগা, ক্লাবহাউসসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে পাবেন ফতুয়া, টপ ও টিউনিক। পোশাকের বিভিন্ন অংশে কুচির ব্যবহার পোশাকে এনেছে বৈচিত্র্য। ছোট হাতার পোশাক যেমন আছে, তেমনি আবার একটু বড় হাতার নকশায়ও আছে ভিন্নতা। বড় হাতার নিচের অংশ হয়তো একটু ছড়ানো, সেখানেও থাকছে কুচির ব্যবহার।


সুতির সাদায় মিলবে স্বস্তি

 

সুতির সাদায় মিলবে স্বস্তিইশরাত জাহান বলেন, একই কাপড়ের পোশাকের কাটে একটু বৈচিত্র্য আনলেই তা বড় পার্থক্য সৃষ্টি করে। বেলবটম ধরনের হাতা হলে বা হাতায় বো বাঁধা হলে যেমন সুন্দর দেখায়, তেমনি তা পোশাকটিকে একটু অন্য রকম করে তোলে। আবার হাতাকাটা পোশাকের সঙ্গে হয়তো শার্ট কলার করা হলো। এই পোশাকের পুরোটাতেই বোতাম থাকতে পারে, আবার পোশাকটির অর্ধেকটা পর্যন্তও বোতাম থাকতে পারে। ছোট ছোট যোগ-বিয়োগ সুতি কাপড়ের পোশাকেও নিয়ে আসে ভিন্নতা। একরঙা একটি পোশাক আর সেই একই রঙের ওপর অন্য একটি রঙের জলছাপ করা পোশাক দেখতে আলাদা হয়। বিভিন্ন মোটিফে কাজ করার ফলেও পোশাকে ভিন্নতা আসে।
 

 

বুননের সময় কাপড়ে তোলা নকশাও পোশাকে আনে বৈচিত্র্য (যেমন ডবি নকশা)। ইশরাত জাহান জানালেন, খাটো, মধ্যম ও লম্বা—এই তিন ধরনের টপই চলছে এখন ফ্যাশনে। অ্যাপ্লিক, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট বা হাতে করা সুতার কাজ থাকছে পোশাকগুলোতে। কিশোরী থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সীদের জন্য সুতির স্কার্ট রয়েছে দেশালে।
বিশ্বব্যাপী সুতি পোশাকের চাহিদাও বেশ। ক্লাবহাউসের হেড অব ডিজাইন মো. আবিদ শেখ জানালেন, সুতি পোশাকে নানানভাবেই ভিন্নতা আনা সম্ভব। সুতি কাপড়ে তৈরি লম্বা শার্ট, পাঞ্জাবি কাটের টপ, টিউনিক ও পশ্চিমা ধাঁচের টপের এখন বেশ চাহিদা।

 

মডেল: শাহ্‌তাজ, সাজ: বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ, পোশাক: বিবি প্রোডাকশনস, ছবি: কবির হোসেন

মডেল: শাহ্‌তাজ, সাজ: বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ, পোশাক: বিবি প্রোডাকশনস, ছবি: কবির হোসেন

 

 

সুতি পোশাকের অনুষঙ্গ-
পোশাকের সঙ্গে গয়না ও অন্যান্য অনুষঙ্গ নির্ভর করে নিজের ওপর। বিবি রাসেলের মতে, যিনি পরছেন তাঁর ব্যক্তিত্ব, কোন সময় আর কোথায় যাচ্ছেন—এসব বিষয় মাথায় রেখে গয়না বা অনুষঙ্গ বেছে নিতে হবে। সকালে কাজে বেরোলে হয়তো সারা দিনের জন্য বড় একটা ব্যাগ সঙ্গী হতে পারে। আবার রাতের অনুষ্ঠানে ছোট ব্যাগ নিলেই হচ্ছে। সুতি পোশাকের সঙ্গে কাচের চুড়ি, সুতার চুড়ি ও দেশীয় মালা বেশ মানানসই। রুপা, কাঠ, পুঁতি, কাপড় ও দেশীয় নানান উপকরণে তৈরি গয়না পরা যায়।

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো