বলিরেখা আটকাতে
ছোটবেলার জন্মদিনগুলোই মজার ছিল। ভাবতাম বড় হচ্ছি। এখন জন্মদিন এলেই মুখ শুকিয়ে যায়। বয়স বাড়ছে। তার সঙ্গে বাড়ছে জীবনের নানা রকম চাপ। যার প্রথম চিহ্নই পড়ে মুখে। ৩০ বছর পার করলেই বলিরেখার আগমন শুরু হয়ে যায়। একটু সচেতনতাই পারে বলিরেখার ছাপ আটকাতে। ঘরোয়া কিছু পরামর্শ দিলেন আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।
শুধু বয়সের ওপর দোষ দিয়ে লাভ নেই। মুখে বলিরেখা পড়ার অনেক কারণই আছে। রোদ, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, পরিবেশদূষণ, বাজে খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি। তৈলাক্ত ত্বকের চেয়ে শুষ্ক ত্বকে বলিরেখা তাড়াতাড়ি পড়ে। শুষ্ক ত্বকের নমনীয়তা কমে আসে। ফলাফল ছোপ ছোপ কালো দাগ ও চোখের নিচে কুঁচকে যায়।
মুখে বলিরেখা পড়ছে কি না বোঝার কিছু উপায় আছে। জানালেন রাহিমা সুলতানা—
* ত্বক বারবার রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যাবে
* চোখের নিচের অংশ কুঁচকে যাবে
* ত্বকে ছোট ছোট কালো তিল দেখা যাবে
* এ ছাড়া ত্বক পাতলা হয়ে যাবে
* ত্বকে ছোট ছোট গর্ত দেখা দেবে
* হাসির সময় চোখের কোনায় ভাঁজ পড়বে
* চামড়া ঝুলে যাবে ইত্যাদি।
সমাধান কিন্তু আমাদের হাতের নাগালে। দরকার গোছানো ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা এবং ত্বকের উপযুক্ত পরিচর্যা।
শুষ্ক ও সাধারণ ত্বকের জন্য ঘরোয়া প্যাক
* কাঠবাদাম, দুধ ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে মুখে লাগাতে হবে। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
* দুধের স্বর, কাঠবাদাম ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে মুখে লাগাতে পারেন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য
* ডিমের কুসুম ও ওটস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে।
* মোটর ডালের গুঁড়ো, ডিমের কুসুম ও মধু মিশিয়ে মুখে দেওয়া যেতে পারে। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
মিশ্র ত্বকের জন্য
* ডিমের সাদা অংশ, কমলার রস ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০-২৫ মিনিট রেখে কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
* দুধের স্বর, ওটস ও দুই-তিন ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে দিতে পারেন।
এই প্যাকগুলো সপ্তাহে দুই দিন নিয়মিতভাবে মুখে লাগান। উপকার পাওয়া যাবে বলে জানান রাহিমা সুলতানা। রাতে বেসন অথবা দুধ ও মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। তারপর ময়েশ্চারাইজার লাগানো বাধ্যতামূলক। বয়স হলে অ্যান্টিরিঙ্কেল ডে ও নাইট ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার শুরু করে দিন। এ ছাড়া চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার জন্য দুই টুকরা শসা লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন।
খেয়াল রাখা উচিত আমাদের খাদ্যাভ্যাসের দিকেও। সম্ভব হলে প্রতিদিন এক গ্লাস করে তাজা ফলের রস খান। উপকার পাবেন। সবুজ আপেল, লাল আঙুর বিচিসহ, পেয়ারা, কলা, আমলকী ইত্যাদি ফলের মধ্যে প্রতিদিন অন্তত একটি ফল খাওয়া উচিত। সবুজ শাকসবজি যেমন ব্রকলি, ঢ্যাঁড়স, পুঁইশাক, লালশাক, গাজর, টমেটো খাওয়া উচিত। মূলত ভিটামিন এ, ই, ডি ও সি-যুক্ত খাবার খেলে বলিরেখার আগমন ধীরে আসবে।
Source: The daily Prothom Alo
Image Source: Collected