পাতলা জ্যাকেটের আরাম !
সময়টা যাচ্ছে না গরম, না ঠান্ডার মিশেলে। শীতের পোশাক পরে রাস্তায় বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরই কড়া রোদে গরম লাগতে শুরু করে। কখনো রোদ দেখে হাতাকাটা পোশাক পরে বের হলেন। ওই দিনই দেখা গেল ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে। পাতলা জ্যাকেটগুলো এসব পরিস্থিতিতে আরাম দেয়। ডিজাইনাররা বলেন জ্যাকেটের সঙ্গে প্যান্ট ও চুলের স্টাইলটিও ঠিকঠাক রাখতে হবে।
জ্যাকেটে নতুনত্ব-
জ্যাকেট আর ব্লেজারের সংমিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে নতুন ধরনের ব্লেজার জ্যাকেট। এ ধরনের ব্লেজার জ্যাকেট বন্ধুদের আড্ডা থেকে শুরু করে সান্ধ্য পার্টিতেও পরা যাবে অনায়াসে। তবে সেইলরের পিউ লেদারের জ্যাকেটগুলোয় নেকলাইন এবং আউটার প্যাটার্নে থাকছে বৈচিত্র্য। টার্টল, সোয়ান বা বোট নেক বেশ জনপ্রিয়।বাদামি বা টকোলেট রঙের জ্যাকেট মানিয়ে যাবে যেকোনো জায়গায়।
লেদার জ্যাকেট-
লেদার পিওর সিনথেটিক কিংবা মিশ্র উপাদানে তৈরি জ্যাকেট যা অফিসে, সান্ধ্য পার্টি বা নৈশ আড্ডায় খুব জনপ্রিয়। জম্পেশ একটা লেদার জ্যাকেট আর জিনস—ফুটিয়ে তুলবে আপনার সাহসী সাজকে, জানালেন ডিজাইনার রামীম রাজ। কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের পুরো হাতার জ্যাকেট না পরে পাতলা লেদারের ওয়েস্টকোট পুরো হাতার শার্ট বা পুলওভারের সঙ্গে পরলে ভালো লাগবে। যাঁরা পুরো চামড়ার জ্যাকেট বহন করতে পারবেন কি না ভেবে চিন্তিত, লেদারের প্যাঁচ দেওয়া জ্যাকেট পরে দেখতে পারেন। জিনসের সঙ্গে মানিয়ে যাবে বাইকার জ্যাকেটও। বাদামি বা বেজ রঙের লেদার জ্যাকেট সংগ্রহে রাখুন। মিলিয়ে পরতে পারবেন অনেক কিছুর সঙ্গেও।
স্থায়িত্ব, আরাম, রং ও টেক্সচারের জন্য এই জ্যাকেটের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। নকশায় চামড়ার জ্যাকেটের জনপ্রিয় কিছু স্টাইল হচ্ছে বেসিক ওয়েস্ট লেস জিপ ফ্রন্ট জ্যাকেট, ভেলেন্ট লেদার রাইডিং জ্যাকেট, ইলাস্টিকসহ বোম্বার স্টাইল জ্যাকেট, মোটরবাইক, মিলিটারি, অ্যাভিয়েটর, রকস্টার, পাঙ্ক, পুলিশ জ্যাকেট, ক্ল্যাসিক লেংথ জিপ ফ্রন্ট কিংবা টু বাটন, ফোর বাটন জ্যাকেট ইত্যাদি। চামড়ার জ্যাকেটে আছে নানা রঙের খেলা। ইস্পাতের বোতামের ব্যবহার জ্যাকেটগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। চামড়ার এক রঙের জ্যাকেট ছাড়াও আছে চেক নকশার জ্যাকেট। কোনোটিতে আবার কাপড়ের সঙ্গে চামড়ার ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু জ্যাকেট আছে, যেগুলোয় জিপার ব্যবহার করলেও বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। কারণ তা ভিন্ন রঙের কাপড়ে ঢাকা। জিপার দেখা না গেলেও সেলাইয়ের বৈচিত্র্য চোখে পড়ার মতো। জিনসের সঙ্গে জ্যাকেট পরতে পারেন অনায়াসে।
ডেনিম জ্যাকেট-
হালকা শীতে ডেনিম জ্যাকেটের কোনো বিকল্প নেই৷ জিনস, শর্টস, ড্রেস—সবকিছুর সঙ্গেই পরা যায় ডেনিম জ্যাকেট৷
ক্রপ জ্যাকেট-
যাঁরা জ্যাকেট পরেন আলমারিতে অন্য সবকিছুর মধ্যে ক্রপ জ্যাকেট থাকতেই হবে। রামীম রাজের পরামর্শ, ট্রাউজার্সের পাশাপাশি শাড়ির সঙ্গেও দেখতে ভালো লাগে৷
জ্যাকেটে দেখা যাচ্ছে নানা রঙের খেলা
কেপ-
একটু ভারী কাপড়ের কেপও এখন বেশ চলছে। কেপ অবশ্য একটু ওম দেওয়ার মতো করেই তৈরি করা হয়। গোল গলা বা শেরওয়ানি কাটের কেপও তরুণীদের মধ্যে এখন জনপ্রিয়। কিছু কেপে ব্যবহার করা হচ্ছে মেশিন অ্যাম্ব্রয়ডারি বা কাটওয়ার্ক। হাতাতেও থাকছে বৈচিত্র্য। মূলত সন্ধ্যাকালীন পোশাকে কেপ কিছুটা জমকালো অনুভবও করাবে।
পাবেন যেখানে-
জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে একসট্যাসি, ক্যাটস আই, সেইলর, ইয়েলো, জেন্টল পার্ক বা ইজিতে। ফ্যাশন হাউসগুলোতে তো বটেই, ছোট-বড় প্রায় সব শপিং কমপ্লেক্স, নিউমার্কেট, বঙ্গবাজার, ইসলামপুর, আজিজ সুপার মার্কেট, রাজধানী সুপার মার্কেট, প্রিন্স প্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোয় চোখ পড়লেই দেখা যায় জ্যাকেটের কী বিশাল সংগ্রহ।বন্ধুদের আড্ডা থেকে শুরু করে বৈকালিক দাওয়াতেও ভিন্নতা আনবে ব্লেজার, জ্যাকেট।
দরদাম-
রেক্সিনের জ্যাকেট পাওয়া যায় ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। লেদারের জ্যাকেট ২ হাজার ২০০ থেকে ১২ হাজার, রেইন কোটের মতো পাতলা কাপড়ের জ্যাকেট দেড় থেকে সাড়ে তিন হাজার, মখমলের জ্যাকেট ৪ থেকে ৬ হাজার, সুতি কাপড়ের জ্যাকেট ১ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার এবং খাদি কাপড়ের জ্যাকেট পাওয়া যায় ১ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে। ফ্যাশন হাউস থেকে কিনতে হলে ২ হাজার টাকা থেকে বাজেট রাখতে হবে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো