শার্টে ফ্লোরাল প্রিন্ট
বারোমাসি ফ্যাশন ছাড়াও অফিস-আড্ডায় আরামদায়ক ফ্লোরাল প্রিন্টেড শার্টগুলো এখন তারুণ্যের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। ফেব্রিকের দিক থেকে শার্টে এসেছে বৈচিত্র্য। নতুনত্ব এসেছে ডিজাইনেও।
এক সময় একরঙা শার্টের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। সেই সময়টা বদলেছে। এখন চেক, প্রিন্টেড, স্ট্রাইপের শার্ট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফ্যাশন পাড়ার প্রতিটি শো-রুমে। নানা রঙে রঙিনভাবে সেজে উঠেছে শার্টের জমিন। ডিজাইনারদের ট্রেন্ডি ভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে শার্টে। নানা রং-ঢঙের স্ট্রাইপ ও ফ্লোরাল মোটিফ শার্টে যোগ করেছে নতুনত্ব। আজ বলব ট্রেন্ডের গল্প।
আরামের কথা এলে প্রথমেই বলতে হবে ক্যাজুয়ালের গুণকীর্তন। বারোমাসি ফ্যাশন হলেও উৎসব আর পার্বণে এর মাত্রা ক্যাজুয়াল ফ্যাশন ছাড়িয়ে যায় অতীতের সব রেকর্ড। আর তাতেই বোঝা যায় বর্তমান ফ্যাশনে ক্যাজুয়ালের কদর কতখানি! এক সময় ক্যাজুয়াল ফ্যাশনে কেবল একরঙা শার্টের দাপট ছিল দেখার মতো। বর্তমানে বারোমাসি ক্যাজুয়াল ফ্যাশনে একরঙা এবং স্ট্রাইপ শার্টের চাহিদা থাকলেও বেড়েছে ফুলেল প্রিন্টেড শার্টের কদর। বর্তমানে ফুলেল প্রিন্টেড শার্টের জমিনে যোগ হয়েছে নানা রং বদলের খেলা।
এ প্রসঙ্গে ডিমান্ড ফ্যাশন হাউসের চেয়ারম্যান রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও ছেলেদের পোশাকে ফুল, শুনতেও বেমানান লাগত। কিন্তু বর্তমানে ছেলেদের সবধরনের পোশাকেই দেখা যাচ্ছে ফুলেল নকশা। বিশেষত শার্টে। ফুলেল শার্টে সাধারণত দুই ধরনের কাজ হচ্ছে। একটি ছাপা নকশার, অন্যটি মেশিন এমব্রয়ডারির। তবে গরমের পোশাক হিসেবে সুতি কাপড়ের ওপরেই করা হচ্ছে এগুলো। বিশ্ব ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকে সবুজ, হলুদ, এমনকি গোলাপি রঙের পোশাকও পরছেন, জানালেন ডিজাইনাররা। বিশ্ব ফ্যাশনের ধারায় বৈচিত্র্যময় রঙের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। ফ্যাশনসচেতনেরা সেই ধারা গ্রহণও করছেন।’
ফুলই শুধু নয়, পাতার নকশায়ও রয়েছে ভিন্নতা। গোলাপ-জবার আদলে ছাপা ফুল, কিংবা অন্য কোনো বড় আকৃতির ফুলেল নকশা পুরো শার্টে। শার্টের কলারেও বৈচিত্র্য রয়েছে। ব্যাং কলার কিংবা ডাবল কলারের শার্ট পাবেন বাজারে। তা ছাড়া কাপড়ের সঙ্গে সময়ের খাতিরের বিষয়টি মাথায় না রাখলেই নয়। কেননা, এই সময়টায় গরম ঠান্ডার মিশেল। তাই কাপড় হিসেবে আরামদায়কই হবে প্রথম পছন্দ। নানান রঙের ফেব্রিকে বৈচিত্র্য থাকলেও সুতি, ইজিপশিয়ান কটন, মিশ্র লিনেনের কদরই সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে এই গরমে চলছে সুতির রাজত্ব। তবে সুতির কাপড়ের কটনের সঙ্গে লিনেন, ভিসকসের মিশ্রণেও কাপড়ের নমনীয়তা এবং মসৃণতা থাকে ঠিকঠাক। আবার কাপড়ের সঙ্গে প্রিন্টের মিল না থাকলেও ফ্যাশনটি যেন জমে ওঠে না। তাই বেছে নিন ফুলেল প্রিন্টের সঙ্গে মানানসই পোশাক।
তবে ফ্যাশনে ট্রেন্ডও গুরুত্বপূর্ণ। সময় এখন সেমি ফিটিংস শার্টের। বেশি টাইট শার্ট কয়েক বছর আগেই ফ্যাশনের বাইরে। আবার বেশি ঢোলাও মানানসই নয় এ যুগে। সেমি-ফিটিংস সময়ের সঙ্গে বেশ মানানসই। শার্টের পরিবর্তনটা ইদানীং বেশ লক্ষণীয়। আগে শার্টে ফুলেল নকশা থাকলেও এখন সাধারণ শার্টে ফুলেল ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। মানাচ্ছেও ভালো, ছেলেদের শার্টের ফুলগুলোর আকার করা হচ্ছে ছোট। রঙের ক্ষেত্রে ছেলেরা হালকা ও গাঢ় দুই ধরনের রংই পছন্দ করছে। গলায় হালকা কাজ, লম্বা হাতার ফ্লোরাল প্রিন্টেড শার্টগুলো সবসময় তো বটেই, যে কোনো পার্টি কিংবা আড্ডায় বেশ মানিয়ে যায়। প্রতিদিনের ছোটাছুটিতেও প্রিন্টেড শার্টগুলো ভালো। ডবল কলার, বেন্ট কলার চলবে। হাতা গুটিয়ে বা ফরমাল করেও পরা যাবে। এখন অফিসে আদালতেও সবাই এই রকম শার্ট পরছে। শার্টে স্ট্রেটকাট থাকলেও পকেটের আশপাশে পিনটাকস এখনকার ফ্যাশন। কাঁধের অংশে করা হচ্ছে শোল্ডার স্ট্র্যাপ ব্যবহারও।
ফ্লোরাল মোটিফের এসব শার্ট পেতে চলে যেতে পারেন বিশ্বরঙ, রঙ বাংলাদেশ, কে-ক্র্যাফট, সাদা-কালো, বিবিয়ানা, ইজি, বালুচর ইত্যাদি দেশীয় ফ্যাশন হাউসে। আর ভিনদেশি ফ্লোরাল শার্ট পেতে চলে যান এক্সট্যাসি, রিচম্যান, লুবনান, রেড ওরিজিন, র ন্যাশন, টুয়েলভ-এর শো-রুমগুলোয়। ব্র্যান্ড এবং কাপড়ভেদে শার্টের দাম নির্ধারণ করা হয়। মাত্র ৯০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের শার্ট কালেকশন। বসুন্ধরা শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্ক, মেট্রো শপিং মল, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, বঙ্গবাজার এবং আজিজ মার্কেটে পাবেন ফুলেল নকশার শার্ট।
সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন