কুর্তি-কামিজেই স্বাচ্ছন্দ্য
শুরুর দিকে ওয়েস্টার্ন পোশাক তকমা জুটলেও এখন কুর্তি-কামিজ হরহামেশাই পরছেন তরুণীরা। ফ্যাশন সচেতন বলেই সময়ের সঙ্গে পথচলায় সিঙ্গেল কুর্তির বেশ নামডাক। ঘরের বাইরে বেরোনর জন্য অনেকেই নিশ্চিন্তে বেছে নিচ্ছেন কুর্তি। রংয়ের যেমন বৈচিত্র্য আছে তেমনি আছে ডিজাইনেও। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণী হোক কিংবা এক্সিকিউটিভ চাকরিজীবী, কুর্তি-কামিজেই স্বাচ্ছন্দ্য। থ্রি-পিসের একঘেঁয়েমি থেকে বেরিয়ে আসতেও অনেকে কুর্তি পরেন। থ্রি-পিসের চেয়ে কুর্তির ডিজাইনে বেশ জাঁকজমক দেখা যায়। ওয়েস্টার্ন নকশার পাশাপাশি আরামদায়ক ফ্রেব্রিক্স থাকায় এসব পোশাক তাদের পছন্দের শীর্ষে। এখন যে গরমের হাঁসফাঁস চলছে তাতে কুর্তি পছন্দসই। যাদের প্রতিনিয়তই নানা ধরনের কাজের জন্য বাইরে যেতে হয় তাদের কাছে কুর্তি-কামিজের চাহিদা বেশি। ব্যস্ততার কারণে কাপড়ের সঙ্গে মিলিয়ে ওড়না, সালোয়ার কেনার সময় করা কঠিন হয়ে যায়।
কুর্তির বড় সুবিধা হলো এর সঙ্গে ম্যাচিং কামিজ না থাকলেও জিন্স, লেগিন্স বেশ মানিয়ে যায়। আর গরমের কারণে যারা একটু ঢিলেঢালা আর আরামদায়ক পোশাক খুঁজছেন কুর্তি হতে পারে সেই সমাধান। কুর্তি লম্বা সিঙ্গেল কামিজ এখনকার যুগের সঙ্গে মানানসই। কুর্তি কামিজেরই একটি আলাদা স্টাইল। নতুন ঢঙের কুর্তি কামিজগুলো বেশ নান্দনিক। কুর্তি বা লম্বা কামিজের বটমে ইউ, ভি, উল্টা ভি, বোট কাটিং, চওড়া বা স্ট্রেইট প্যাটার্ন, বাটারফ্লাই ইত্যাদি ডিজাইন দেখা যায়। হাতার ডিজাইনে ঢিলেঢালা, কার্ভ স্লিভ, বেল স্লিভ পাওয়া যায়। গলার ডিজাইনে থাকে সেমি বোট নেক, পোর্ট্রেট, জুয়েল, স্কয়ার, গেদার্ড নেক, সেট ইন স্লিভ নেকের মতো প্যাটার্ন। কুর্তিতে অ্যামব্রয়ডারি ও প্রিন্টের কাজ খুব বেশি জমকালো হলে তা বেমানান। তবে বডিতে হালকা কাজ ট্রেন্ডের মধ্যেই পড়ে।
সুতি ভয়েল বা লিলেন ভয়েল, চায়না ভয়েল কাপড় দিয়ে তৈরি হয় হালফ্যাশনের কুর্তি-কামিজ। ইদানীং স্ট্রিট ফ্যাশনে গরমের সময়টায় সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি একটি কামিজ বা সিঙ্গেল কুর্তির অনেক কদর। সিঙ্গেল কামিজের ডিজাইন, কাটিং, রংসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে দেওয়া হচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া। হালকা রঙের কুর্তিই এখন মানানসই। রাতের অনুষ্ঠানের জন্য গাঢ় রঙই আদর্শ। রঙ বাছাইয়ে সামার কালার প্যালেট অনুসরণ করাই ভালো। কিছু রঙ আছে যেগুলো ক্যাসিক; যেমন-সাদা, কালো, সোনালি, লাল। এগুলো কুর্তিতে বেশ মানানসই। তবে এখনকার টেন্ডি রং প্যাস্টেল, পিচ ইত্যাদিও এই পোশাকে সময়ের কথা বলবে।
ফ্যাশন ট্রেন্ড সম্পর্কে ফ্যাশন হাউস ডিমান্ডের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘এখন সব ধরনের পোশাকেই রঙের বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে বেশি। ডিমান্ডের ঈদের কালেকশনেও ছেলে ও মেয়েদের পোশাকে বিভিন্ন রঙের দুর্দান্ত ব্যবহার করা হয়েছে।’
বর্তমান ফ্যাশন ট্রেন্ড অনুযায়ী হালকা রঙের সুতি, লিলেন, খাদি আর তাঁত কাপড়ে তৈরি হচ্ছে নকশাদার স্লিভলেস বা কম দৈর্ঘ্যরে হাতার কামিজ আর কুর্তা স্টাইলের লম্বা কামিজ। উৎসবের জন্য বেছে নিতে পারেন সিল্ক, মসলিন, অ্যান্ডি সিল্ক, তসর, নেট, জর্জেটসহ নানা গর্জিয়াস কাপড়। কামিজ বা কুর্তার ক্যানভাসে নকশা করা হচ্ছে কারচুপি, স্প্রে, সিকুইনসহ নানা মাধ্যমে। কুর্তি স্টাইলের লম্বা কামিজ বা সিঙ্গেল কামিজ
আটপৌরে বা বাইরের ফ্যাশন হিসেবে জনপ্রিয়। রং নির্বাচনে সবকিছুর সঙ্গে ম্যাচিং করে পরা যাবে। তবে অ্যামব্রয়ডারির কাজ করা প্যাটার্ন বেজডের সঙ্গে কন্ট্রাস্ট সহজ। কুর্তি কামিজের সঙ্গে পছন্দসই যে কোনো জিন্স, লেগিংস, জেগিংস অথবা ফ্যাশনেবল সালোয়ার পরা যাবে। জিন্স কিংবা লেগিংস ছাড়াও কুর্তি ও সিঙ্গেল কামিজ পরতে পারেন ধুতি, চুড়িদার ও প্রিন্টেড ভ্যারিয়েশনের সালোয়ারের সঙ্গে। এখন চোঁচ পায়জামারও একাধিক স্টাইল, চুড়িদারেরও ভ্যারিয়েশন দেখা যায়।
কামিজে কাজ করা থাকলে সালোয়ারটা সিম্পল পরাই ভালো। আবার কামিজে হালকা কাজ হলে সালোয়ারে কাজ হয় গর্জিয়াস। কামিজের সঙ্গে রং ম্যাচিং করে ওড়না পরতে পারেন অথবা একেবারে বিপরীত রংও বেছে নিতে পারেন। ফেন্সি ওড়নাগুলোর সবচেয়ে বড় সুবিধা একাধিক কুর্তির সঙ্গে পরা যায়। জুতার ক্ষেত্রে স্লিপার, সু, কনভার্স, কেডস সবই মানিয়ে যায়। তবে হাইহিল বা কারুকাজের জুতা একদমই মানাবে না। রং-বেরঙের ইয়ক লাগানোর পাশাপাশি অনেকে কামিজ ও কুর্তিতে লাগাতে পারেন বিভিন্ন আকারের বোতাম। ইয়কের আকার ও ডিজাইনেও রয়েছে বৈচিত্র্য। লাল, নীল, সোনালিসহ বিভিন্ন রঙের বোতাম লাগাতে পারেন কামিজ বা কুর্তির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। আবার ওড়না বা সালোয়ারের রঙের সঙ্গে মিলিয়েও বোতাম লাগাতে পারেন কামিজে।
সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন
ছবিঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন ও সংগৃহীত