হেয়ার রিমুভের বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে জেনে নিন
মসৃন, উজ্জ্বল ত্বকের শত্রু বডি হেয়ার। আজকাল শরীরের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার অপশন প্রচুর। কোন পদ্ধতি ত্বকের পক্ষে ভালো?
শরীরের অবাঞ্চিত লোম দূর করার জন্য রয়েছে প্রচুর অপশন। চলুন হেয়ার রিমুভের খুঁটিনাটি জেনে নেই।
ওয়্যাক্সিং-
এটি শরীরের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার প্রচলিত পদ্ধতি। মূলত পার্লারে এ পদ্ধতিতে লোম দূর করা হয়। তবে এর মধ্যে রকমফের পদ্ধতি রয়েছে। পার্লারগুলো সাধারণত এক বিশেষ ক্রিম বা মিশ্রণের সাহায্যে কাজটি করে থাকে। আজকাল অবশ্য শুধু পার্লারেই নয়, ঘরোয়া পদ্ধতিতেও অনেকে ওয়াক্সিং করে থাকেন। ২ কাপ চিনি, ১/৪ কাপ পানি এবং ১/৪ কাপ লেবুর রস হলেই যথেষ্ট। সবগুলো উপকরণ একটি প্যানে দিয়ে অল্প আঁচে নাড়তে থাকুন। মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। এবার বাটার নাইফের সাহায্যে লোমের গ্রোথে মিশ্রণটি লাগান। ওপরে ওয়্যাক্সিং ক্লথ চেপে রাখুন। এবার লোমের গ্রোথের উল্টো দিকে কাপড়টি টানুন। ব্যাস, লোম উঠে আসবে। আর ওয়্যাক্সিংয়ের পর ত্বকে লাল র্যাশ বেরোয়। এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। ওয়্যাক্সিংয়ের পর ঠান্ডা পানি বা বরফ লাগালে, কিছুক্ষণের মধ্যেই তা মিলিয়ে যাবে। ময়েশ্চারাইজ করতেও ভুলবেন না।
থ্রেডিং-
এটি মূলত নির্দিষ্ট কোনো অংশের শেপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। সাধারণত সূক্ষ্ম লোমের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ভীষণ কার্যকরী। এ পদ্ধতিতে সুতার সাহায্যে লোম গোড়া থেকে টেনে তুলে ফেলা হয়। আইব্রো শেপ করার থেকে আপার লিপ অথবা পুরো মুখের হেয়ার রিমুভ্যালের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
ব্লিচিং-
এই পদ্ধতিতে লোম তুলে ফেলা বা শেভ করার প্রয়োজন নেই। এর মাধ্যমে লোমের রঙ পাল্টে ফেলা হয়। আমাদের ফেসিয়াল হেয়ার অতি সূক্ষ্ম হওয়ায় অন্যান্য হেয়ার রিমুভ্যাল পদ্ধতি অতটাও কার্যকরী হয় না। ব্লিচিং এক্ষেত্রে অনেক সহজ পদ্ধতি। তবে ঘন ঘন ব্লিচ ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক।
শেভিং-
এ পদ্ধতিতে সাবান বা নির্দিষ্ট কোনো শেভিং ফোম ব্যবহার করে রেজারের সাহায্যে হেয়ার শেভ করা হয়। সময়ও কম লাগে, এবং যে কোনো সময় ব্যবহারও করা যায়। তবে, এর নেতিবাচক দিকটি হলো- এতে লোম গোড়া থেকে নির্মূল হয় না। তবে খুব ভালো ফল পেতে, শেভিংয়ের আগে, ভালোভাবে বডি স্ক্রাব করে নেবেন। এতে ত্বকের ওপরের স্তরের মৃত কোষ দূর হয়। ফলে শেভিংয়ের পর ত্বক অনেক বেশি মসৃণ দেখায়।
ট্রিমিং-
বাজারে আজকাল মহিলাদের ট্রিমার পাওয়া যায়। অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় এটি সবদিক থেকেই উপকারী। এ পদ্ধতিতে ক্রিম, ফোমের প্রয়োজন নেই। ব্যথা লাগলেও, তা খুবই সামান্য। তবে শেভিংয়ের মতোই এক্ষেত্রেও গোড়া থেকে লোম নির্মূল হয় না।
হেয়ার রিমুভ্যাল ক্রিম-
আজকাল এ পদ্ধতি ভীষণ জনপ্রিয়। কারণ, এটি বেদনাদায়ক নয় এবং এর ব্যবহার বেশ সহজ। তবে হ্যাঁ, ক্রিম ব্যবহারে কার্পণ্য করলে চলবে না। ঠিকঠাক হেয়ার রিমুভ্যালের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রিম ব্যবহার না করলে ফল পাবেন না।
প্লাকিং বা টুইজিং-
আগের দিনের যখ পার্লার ছিল না। তখন না ছিল এত ক্রিম, না এতসব যন্ত্র। ফলে প্লাকিং বা ওয়্যাক্সিংয়ের ওপরই ভরসা করতে হতো। এ পদ্ধতিতে টুইজার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট অংশ থেকে আলাদাভাবে লোম টেনে তুলে ফেলা হয়।
লেজার-
এ পদ্ধতি বেশ নিরাপদ। তবে লেজারের পরই ত্বকে লালচেভাব বা দাগ-ছোপ দেখা দিতে পারে। তবে তা অবশ্য সাময়িক। এছাড়া কোনো শারীরিক ক্ষতি নেই। এ পদ্ধতিতে বেশ কয়েকটি সিটিং নিতে লাগে। পুরো পদ্ধতি শেষ হলে, আপনার হেয়ার গ্রোথ অনেকটাই কমে যাবে, হয়তো তা আর নজরেও আসবে না। এ পদ্ধতিকে আবার লেজার ট্রিটমেন্ট বা লেজার থেরাপিও বলা হয়।
সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন
ছবিঃ সংগৃহীত