ত্বকের বার্ধক্য রোধে এসেনশিয়াল অয়েলের বেনিফিট
এসেনশিয়াল অয়েলের জাদুকরী ক্ষমতা সর্ম্পকে এখন আমরা জানতে শুরু করেছি। কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল ত্বক এবং চুলের জন্য দারুন কাজ করতে পারে। বিভিন্ন এসেনশিয়াল অয়েলর রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কার্যক্ষমতা। আজকে ত্বকের বার্ধক্য রোধে কয়েকটি এসেনশিয়াল অয়েল সর্ম্পকে জানাবো আপনাদেরকে।
বর্তমান সময়ে পরিবেশ দূষন, প্রাত্যহিক জীবন যাত্রা ধরন, খাবারে ভেজাল সবকিছুই আমাদের ত্বককে নষ্ট করে দেয়, ত্বক বুড়িয়ে যেতে শুরু করে অল্প বয়স থেকেই। এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের ক্ষতিপূরন করা সম্ভব। আপনি চাইলে যে কোন একটি অথবা দুটি অয়েল মিক্স করে ব্যবহার করতে পারেন।
নিচে এমন কিছু এসেনশিয়াল অয়েলের নাম দেয়া হলো, দেখুন আপনি কোনটি ব্যবহার করতে পারেন।
১. জিরানিয়াম অয়েল (Geranium oil)-
এই তেল ত্বকের দাগ কমায় এবং ত্বককে তারুন্যদীপ্ত করে তোলে।ত্বকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা যোগায় এবং নতুন কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর মধ্যে থাকা এসট্রিনজেন্ট উপাদান চোখের নিচের ফোলা ভাব কমায় এবং লোমকূপ ছোট করতে সহায়তা করে। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের ড্যামেজ কমিয়ে দেয়। এই এসেনশিয়াল অয়েলের নিয়মিত ব্যবহারে আপনি পাবেন দাগহীন, সুন্দর ত্বক।
২. ক্যারট সীড অয়েল (Carrot Seed Oil)-
পরিবেশ দূষনের কারনে ত্বকের যে ভাজঁ পরে এবং ক্ষতি হয় এই তেলের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সে ক্ষতি সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে। ডে বা নাইট ক্রিম এর সাথে মিশিয়ে আপনি ত্বকে এই তেল ব্যবহার করতে পারেন।এই অয়েল ত্বক ফর্সা করে এবং ত্বক কে তারুন্যদীপ্ত করে।
৩. মাইর অয়েল (Myrrh Oil)-
এই অয়েলে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরী উপাদান নারীদের মনোপজের কারনে ত্বকের যে সকল সমস্যা হয় সেগুলোর সাথে লড়াই করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের ড্যামেজ প্রতিরোধ করে। বয়সের কারনে ত্বকে ভাজ পরা, শুস্ক হয়ে যাওয়া প্রতিরোধে এটি বেশ কার্যকর। বয়স্ক মানুষদের ত্বকে নিয়মিত ব্যবহারে এটি দারুন ফল দিবে।
৪. ইয়াং ইয়াং অয়েল(Ylang Ylang Oil)-
আপনি যদি ত্বককে টান টান করতে চান, এই অয়েলটি বেছে নিন। এটি ত্বকের বলি রেখা, রিংকেল এবং ক্রো’ ফিট এর জন্যে দারুন কার্যকরী। এটা ত্বকের ইলাসট্রিসিটি বাড়ায়। নিয়মিত ব্যবহারে দেখবেন আপনার ত্বকের বলিরেখা দূর হতে শুরু করেছে। ত্বককে টান টান করতে আপনি আপনার বডি অয়েল বা লোশনের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
৩. রোজ অয়েল (Rose Oil)-
ত্বককে সজীব করতে গোলাপ জলের মতোই কাজ করে রোজ অয়েল।ত্বকে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারাইজার যুগিয়ে ত্বককে সফট করে তোলে। গোলাপ জলের সাথে এই অয়েল মিশিয়ে ময়েশ্চারাইজং টোনার হিসেবে রাতে ব্যবহার করুন।আপনার ত্বকের বলিরেখা কমবে, ত্বক ফর্সা হবে এবং সফট হবে। নিয়মিত ব্যবহার করে এর রেজাল্ট দেখে আপনিও অবাক হবেন।
৪. নিরুলী অয়েল (Neroli Oil)-
এই অয়েল কে বলা যেতে পারে ন্যাচারাল ভিটামিন সি সিরাম। এটি পুরানো দাগ ত্বক থেকে মুছে ফেলতে সহায়তা করবে। এছাড়া এটি রিংকেল এবং স্ট্রেচ মার্ক দূর করতেও কার্যকরী। এটি স্কিন কে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারাইজার যোগাবে।
৫. রোজমেরী অয়েল (Rosemary Oil)-
চুলের ট্রিটমেন্টে এই তেল বেশ জনপ্রিয়। তবে এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের বার্ধক্য রোধেও দারুন কার্যকর। চোখের নিচের ফোলা ভাব দূর করতে, নতুন কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করা এবং ত্বককে টানটান করতে এটি বেশ কাজে দেয়।ত্বকের ফাইন লাইনস এবং রিংকেল দূর করে ত্বককে করে তোলে নরম কোমল এবং নিখুঁত।
৬. স্যান্ডাল উড অয়েল (Sandalwood Oil)-
ত্বকের যত্নে চন্দন কাঠের ব্যবহার সর্ম্পকে কম বেশী আমাদের সবারই জানা আছে।ত্বকের বার্ধক্য রোধে এর এসেনশিয়াল অয়েলও দারুন।ত্বকের প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারাইজিং এর মাধ্যমে এটি ত্বককে করে তোলে কোমল এবং সতেজ।এটি ত্বকের ফাইন লাইন, রিংকেল কমাতে সাহায্য করে। সেইসাথে ত্বকের ব্রনের দাগ, এজ স্পট দূর করে ত্বককে নিখুত করে তোলে।
৭. গ্রেপ সীড অয়েল (Grape Seed Oil)-
গ্রেপ সীড অয়েলে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি যা ত্বকের ড্যামেজ কমিয়ে দেয় এবং ত্বকের সেল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।এই তেলের নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল এবং সতেজ থাকবে।যদি বয়স বাড়ার পরও আপনার ত্বকে ব্রনের প্রকোপ থেকে থাকে তাহলে এই তেলটি আপনার জন্যে কাজে দিবে। এছাড়া এটি ত্বকে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারাইজার যোগায়।
৮. লেমন অয়েল (Lemon Oil)-
এই অয়েলে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা ত্বককে ফ্রি র্যাডিকাল ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে।এটি ত্বককে উজ্জ্বল করে, ত্বকের টিস্যুর উন্নতি ঘটায়। তবে এতে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি থাকায় সেনসিটিভ স্কিনে লাগালে কিছুটা জ্বলুনি হতে পারে।যদি তেমন সমস্যায় পরেন তাহলে লেমন এসেনশিয়াল অয়েলের বদলে একই ধরনের উপাদান সমৃদ্ধ নিরুলী অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
৯. ল্যাভেন্ডার অয়েল (Lavender Oil)-
ত্বকের যে কোন ধরনের ড্যামেজ সারিয়ে তুলতে এই তেলটি দারুন। এর মধ্যে অ্যান্টি অক্সিডেন্টে পরিপূর্ন হওয়াতে এটি ত্বকের নতুন কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া কোষে অ্যান্টি অক্সিডিন্ট উৎপাদনে সহায়তা করে ফলে ত্বকে সেল ড্যামেজ হওয়া কমিয়ে দেয়। বয়সের কারনে ত্বকের দাগ এবং সান বার্নের দাগ দূর করতে এটি বেশ ভালো কাজ করে।
ছবিঃ সংগৃহীত