বর্ষায় কেমন পোশাক

বর্ষায় কেমন পোশাক

বর্ষার পোশাক এখন আর আগের গাঢ় রঙের থিমে আটকে নেই। সাদা, অফহোয়াইট, হালকা গোলাপি, হালকা সবুজ, আসমানিসহ মোলায়েম রংগুলো ব্যবহূত হয়েছে। এসব রং আপনার চোখকে যেমন প্রশান্তি দেবে, তেমনি মনকেও ভরিয়ে তুলবে প্রাকৃতিক আনন্দে। কে ক্রাফটের ফ্যাশন ডিজাইনার শায়লা নূর বলেন, ‘বর্ষায় আগের মতো আর গাঢ় রংকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। বর্ষার সময় বেশিরভাগ সময় গরম থাকায় ঘুরেফিরে স্বস্তির জায়গায় আটকে যাচ্ছেন সবাই। সেজন্য বেছে নিচ্ছেন সুতি আর হালকা রঙের পোশাক। তাই এবারের বর্ষাতে আমরা এক রঙা ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি পেইন্ট ইমেজ। সেখানে বেছে নেওয়া হয়েছে বর্ষায় ফোটা কয়েকটি ফুল।’

 

যদিও বিগত দিনের ধারায় বর্ষার পোশাকের রং হিসেবে ধরে নেওয়া হয় গাঢ় রংকে। নীল, সবুজ তার মধ্যে অগ্রগণ্য। কিন্তু সময় বদলেছে। পরিবর্তন ঘটেছে মানুষের রুচির। শৌখিনতা ভর করেছে প্রতিটি স্তরে। তাইতো বর্ষার পোশাক আজকাল হালকা রঙে হাজির হচ্ছে। আসলে এখনকার ঋতু বৈচিত্র্যতাও কেমন জানি। এই মেঘ-বৃষ্টি তো এই প্রখর রোদ। আবার দেখা যাচ্ছে একদিন বৃষ্টি তো পরপর কয়েকদিন টানা গরমের প্রভাব। কখনো মনে হতে পারে আপনি আছেন ঋতুরাজ বসন্তে। তাই আর বর্ষায় ভিজে কাপড় নষ্ট হবে সে চিন্তার দরকার হবে না। একই সঙ্গে শৌখিনতার পরিচয় দিতে হালকা রঙের এসব পোশাকই ক্রেতাদের আগ্রহের জায়গা হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

 

 

আমাদের দেশের ফ্যাশন হাউসগুলো বর্ষার কথা মাথায় রেখে কাপড়, রং ও ডিজাইন নির্বাচন করে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস বর্ষা ঋতুর থিম ব্যবহার করে থাকে। বৃষ্টি, বর্ষার ফুল, লতাপাতা, মেঘলা আকাশ এসব বিষয় উঠে আসে পোশাকের মোটিফ হিসেবে। এ ছাড়া ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট, হালকা অ্যামব্রয়ডারি ও চুমকির কাজ থাকে পোশাকগুলোতে। রঙের ক্ষেত্রে সবুজ, নীল, ছাই, আকাশি— ইত্যাদি প্রাধান্য দিয়ে থাকে হাউসগুলো।  মেয়েদের কামিজের কাটিংয়ে থাকবে একটু ঢিলেঢালা ভাব। বর্তমান সময়ে এই কাটিংই বেশি চলছে। স্লিভলেস বা বাটারফ্লাই হাতার কামিজগুলো ট্রেন্ডি কামিজ থেকে কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি হচ্ছে। সালোয়ার হিসেবে প্লাজো অথবা প্যান্ট কাটিং মেয়েদের বেশি পছন্দের। টপস, কুর্তি বা শাড়িতে বর্ষার পোশাক প্রস্তুত করা হয়েছে অত্যন্ত ট্রেন্ডি লুকে। এসব পোশাকের পাশাপাশি বর্ষার গাঢ় রঙের ট্রেন্ডও প্রচলিত রয়েছে।

চাইলে গাঢ় নীল, সবুজ পোশাক বেছে নিতে পারেন। বৃষ্টির সময়টাতে আবহাওয়া খানিকটা গুমোট থাকে বলে জর্জেট কাপড়কে অনেকে বেশি প্রাধান্য দেন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে চাইলে অ্যান্ডি সিল্কের পোষাক পরা যেতে পারে। রংটাও একটু গাঢ় পরাই সুবিধাজনক। সহজে ধোয়া যায় বা ভিজলে তাড়াতাড়ি শুকায় তেমন পোষাকই নির্বাচন করুন।

 

বর্ষায় সালোয়ার-কামিজের ক্ষেত্রে সুতির বদলে সিনথেটিক ফেব্রিকের কাপড় বেছে নিতে পারেন। শাড়ির ক্ষেত্রেও সুতি এড়িয়ে শিফন বা জর্জেট বেশি উপযোগী। কাপড়ের রং নির্বাচনে উজ্জ্বল ও গাঢ় রংগুলো বাছাই করুন। বর্ষার সঙ্গে নীল রঙের একটা সম্পর্ক রয়েছে। চেষ্টা করুন নীলের ছোঁয়া বা কম্বিনেশনে পোশাক পরতে। খুব বেশি পাতলা কাপড় এ সময় পরবেন না।

 

পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে সাজের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। এই সময়ে মুখের সাজ হালকা হলেই ভালো লাগবে। কপালে ছোট টিপ এবং চোখে নীল, সবুজ বা ছাই রঙের কাজলের টান দিতে পারেন। চোখের সাজের ক্ষেত্রে ওয়াটারপ্রুফ কাজল, মাশকারা, লাইনার ব্যবহার করুন। আইশ্যাডো দিলে হালকা কোনো রং বেছে নিন। হালকা ফেস পাউডার লাগাতে পারেন। লিপস্টিকের বেলায় গ্লসি হলেই ভালো। হালকা গোলাপি, বাঙ্গি, হালকা বাদামি ধরনের রং বাছাই করতে পারেন লিপস্টিকের ক্ষেত্রে। চুলের জন্য চাই বর্ষা উপযোগী বাঁধন। যাদের চুল লম্বা বা মাঝারি, তারা হাত খোঁপা করতে পারেন। খোঁপা আটকানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন চুলের কাঁটা বা ক্লিপ। পনিটেল করলেও খারাপ লাগবে না। এই বাঁধনটি যে কোনো পোশাকের সঙ্গে দারুণভাবে মানিয়ে যায়। চাইলে সাধারণ বেণির পাশাপাশি করতে পারেন ফ্রেঞ্চ বেণিও। চুলে দুটি ফুল গুঁজে দিলে আরও ভালো লাগবে।

 

সূত্র ও ছবিঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন