শীতের জমকালো সাজ
নতুন বছরে সবকিছুতেই থাকে নতুনত্ব। তাহলে পার্টি সাজে কেন নয় ? পোশাক হোক বা সাজ—কোনোটা নিয়েই নেই বাড়তি চিন্তা। আর শীতকালে ফ্যাশনবেল সাজপোশাকের জন্য নানা ধরনের উৎসব আয়োজন তো আছেই। কী রকম পোশাক পরবেন শীতের নানা আয়োজনে ? রঙের কথা বললে চলে আসে পপ গ্রিন ও কমলার কথা। কারণ, এই সময়ে বিশ্বব্যাপী চলছে এই দুই রং। আমরাও চাইলে এই শীতে কমলা রং বেছে নিতে পারি। দেশে কাতানের চল বেশি। কাতান কাপড়ের মিশেল দিয়ে পোশাক বানানো যেতে পারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরার জন্য। হালকা চালের অনুষ্ঠানে বেছে নিতে পারেন উজ্জ্বল রং।
সোনালি ও ছাই রং মিলিয়ে ভারী কাজের শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের নকশাও নজর কাড়বে। শাড়ি ও ব্লাউজ: আদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ
ভারী কাজের শাড়িও চলবে
শাড়ি পরতে চাইলে একটু ভারী কাজের শাড়িই ভালো মানাবে। সেটার উপকরণ হতে পারে ফুলেল নকশার লিনেন বা কাতান। মসলিন শীতে এড়িয়ে চলাই ভালো।
শাড়ির সবচেয়ে ভালো জুটি শাল। জমকালো কাজের শাল পাবেন বাজার ঘুরলেই। শাড়ি বা সালোয়ার–কামিজ জমকালো হলে শালটা হোক একরঙা। তবে কিছু ক্রপ টপ ডিজাইনের বা সুইটশার্ট পাবেন বাজারে। সেগুলো ব্লাউজ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সালোয়ার–কামিজের জন্য জরির কাজ করা মাঝামাঝি লম্বা (মিডলং) হাতাকাটা জ্যাকেটও বেছে নিতে পারেন।
শীতের অনুষ্ঠানে উজ্জ্বল রং-
এই শীতের পার্টিতে পরার জন্য একটু ভারী কাজের উজ্জ্বল রঙা পোশাক হলেই চলবে, এমনটাই জানালেন ড্রেসিডেলের স্বত্বাধিকারী মায়া রহমান। বললেন, শীতকালে বেছে নিতে পারেন পুরো হাতার পোশাক। শাড়ি ছাড়া আনারকলি বা লেয়ার দেওয়া ড্রেসও পরতে পারেন। যেহেতু আবহাওয়াটা ঠান্ডা, তাই ঘের দেওয়া কোনো ড্রেসও পরা যায় ইচ্ছে হলে।
শাড়ির ব্যাপারে মায়া রহমানের পরামর্শ, এ সময় তসর শাড়ি পরতে পারেন। তার সঙ্গে হালকা শাল থাকতে পারে। ব্লাউজ পরতে পারেন সুন্দর নকশার। আবার ভারী কাজ করা বন্ধ গলার বা কলার দেওয়া থ্রি–কোয়ার্টার বিভিন্ন ডিজাইনের ব্লাউজ পরা যায় এ সময়ে। ব্লাউজ ভারী হলে শাড়িটা হালকা হলেও ক্ষতি নেই। শীত লাগলে শাড়ির সঙ্গে হাতাকাটা কটি নিতে পারেন। শাল পরতে চাইলে যান বিপরীত (কনট্রাস্ট) রঙে। যেমন নেভিব্লু শাড়ির সঙ্গে হয়তো মেরুন বা লাল শাল, জ্যাকেট পরা যায়।
বিয়ের নানা অনুষ্ঠানে-
আদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভের ডিজাইনার ও স্বত্বাধিকারী নাজিয়া হাসান জানালেন, শীতে বেশি থাকে বিয়ে ও বৌভাতের আয়োজন। সেখানে সবারই চাই একটু ভিন্ন রকম জমকালো পোশাক। সিকুয়েন্স, জারদৌসির ভারী কাজ চলে খুব বেশি। আয়োজনগুলো বেশির ভাগই রাতে হয়, তাই অনেকে জর্জেট ও সিল্ক পছন্দ করেন। শীত, তবু নেট পছন্দ করেন কেউ কেউ। লেহেঙ্গা বা লম্বা জ্যাকেট বেছে নেন অনেকে। আর যাঁরা একটু বয়স্ক, তাঁরা ভারী কাজের শাড়িই পছন্দ করেন বেশি। জমকালো কাজের শালও অনেকের প্রিয়। শীতকালে গাঢ় রং পছন্দ সবার। তবে সাদা যেহেতু অভিজাত রং, তাই এর আবেদনও কম নয়।
শাড়িই সেরা-
আমাদের দেশে যেকোনো আয়োজনে সবচেয়ে ভালো পোশাক হচ্ছে শাড়ি। তাতে যদি আমরা একটু ভিন্ন চেহারা দিতে চাই, সে ক্ষেত্রে শাড়ির ওপরে লম্বা বা খাটো জ্যাকেট পরা যায়। বললেন বিবিয়ানার ডিজাইনার লিপি খন্দকার। যে কাপড়ের শাড়ি, সেটা দিয়ে বানানো জ্যাকেটও চলবে। কোমরসমান পঞ্চো দিয়েও পরতে পারেন। ব্লাউজ ধরনের জ্যাকেটের সঙ্গে বেশ আকর্ষণীয়ভাবে শাড়ি পরতে পারেন। উঁচু গলা, পুরো হাতা, ফ্রিল, পাফ হাতা, রুমাল হাতার ব্লাউজ এখন চলছে খুব।
ভিন্ন কাটের টপের সঙ্গে খাটো কটিতে কাঁথার ফোঁড় আর নিচের অংশে স্কার্ট একালের তরুণীর সাজ। পোশাক: অরণ্য
শাড়ির বিকল্প-
শাড়ি পরতে না চাইলে বেছে নিতে পারেন লম্বা ও খাটো কামিজের সঙ্গে স্কার্ট। সঙ্গে ভারী দোপাট্টা বা শাল পরা যেতে পারে শীতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। পরতে পারেন সারারাও। সুন্দর ডিজাইনের স্কার্ট পালাজ্জো তো আছেই। বিয়েতে পরার জ্যাকেটেও আনা যাবে ভিন্নতা। কাতান কাপড়ের জ্যাকেট বানিয়ে তা পরতে পারেন।
কাঁচা হলুদ রঙের কামিজের নকশায় সাদা পুঁতির ভারী কাজ। পোশাক: ড্রেসিডেল
সাজে হালকা বেজ-
ফ্যাশন বোদ্ধারা বলছেন, এই শীতে মেকআপের বেজ হবে একদমই হালকা। লিপস্টিকেও খুব গাঢ় রং নয়, বরং গাঢ় রংগুলোর হালকা শেড দেখা যাবে। তাই উৎসব আয়োজনে সবার নজর কাড়বে শুধু জমকালো পোশাকই।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো