হলুদের সাজে ভিন্নতা
গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে শাড়ি পরার ঢং আর ফুলের গয়না বদলে দিতে পারে কনের সাজ। হলুদের অনুষ্ঠান ছাড়া কি আর বিয়ের আয়োজন জমে! আজকাল তো বিয়ের চেয়ে হলুদের অনুষ্ঠানে বিশেষ আগ্রহ দেখা যায়। আর তাই কনের হলুদের সাজসজ্জাও বিশেষভাবে নজরে আসে। একটু ভিন্নভাবে শাড়ি পরে বা ফুলের গয়নায় নতুনত্ব এনেই চমকে দিতে পারেন অতিথিদের। আটপৌরে হলুদ শাড়ির সঙ্গে মাথায় রজনীগন্ধা বা গোলাপ—এটাই একসময় ছিল হলুদের সাজ। কিন্তু এখন শাড়ির রঙের সঙ্গে ফুলের গয়নায়ও এসেছে পরিবর্তন।
শাড়ি পরার ঢং-
শাড়িটা যেমনই হোক, সেটা পরার মাধ্যমে কনের লুক বদলে দেওয়া যায়। টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার মুনিরা এমদাদ বলেন, অনেকেই আজকাল থিম ধরে হলুদের শাড়ি বাছেন। সিল্ক, কোটা, তাঁত বা জামদানি কনের শাড়ি যেমনই হোক, তা পরার ধরনই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ হাফ সিল্কের এক রঙা শাড়ি কোমরে বিছা জড়িয়েও পরতে পারেন। আবার চাইলে বাঙালিয়ানার ধাঁচেও পরতে পারেন। আবার কুঁচি বা আঁচল নিয়েও ভাবতে পারেন নতুন করে।
মুনিরা এমদাদ শাড়ি পরার বেশ কিছু ধরনের কথা বললেন-
বাঙালিয়ানায়-
শাড়ির আঁচল পেছনে রাখার পরিবর্তে সামনেই রাখতে পারেন। হাফ সিল্ক, তসর, কাতানের শাড়ির সঙ্গে কোমরে বিছা জড়িয়ে পরা যেতে পারে। তখন গয়না একটু ভারী হলেই ভালো দেখাবে।
লেহেঙ্গার ধাঁচে-
ব্লাউজ ওপরে দিয়ে কটির মতো করেও শাড়ি পরা যেতে পারে। এতে শাড়ি দেখাবে লেহেঙ্গার মতো। শাড়ির আঁচল একপাশে রেখে কিংবা চাইলে পেছন থেকে সামনে এনেও রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ব্লাউজ হতে হবে জমকালো। মখমলের কাপড় দিয়েও তৈরি করতে পারেন ব্লাউজ। আজকাল শাড়ির রঙের সঙ্গে কনট্রাস্ট (বিপরীত রং) রেখেও ব্লাউজ বেছে নিচ্ছেন কনেরা।
আঁচল টেনে ঘোমটা দিয়ে-
নিত্যদিনের মতোই হলুদের শাড়িটাও পরতে পারেন। কুঁচি দিয়ে শাড়ি পরে ঘোমটা দিতে পারেন আঁচল টেনেই। সেখানে ফুলের সঙ্গে পুঁতি বা ধাতবের মিশ্রণে তৈরি গয়না ভালো দেখাবে।
ফুলের গয়না-
হলুদের সাজে কনের গায়ে ফুলের গয়না তো থাকেই। তবে বদলে গেছে সেই গয়নার ধরন। মিউনিস ব্রাইডালের রূপবিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমীন বলেন, ‘এখন কনের শাড়ি থেকে শুরু করে চুলের বাঁধন এবং এর সঙ্গে মিলিয়ে ফুলের ব্যবহার অনেক পাল্টে গেছে। চিরায়ত যে রীতি ছিল, তা কিন্তু এখন আর নেই। সাদা, হলুদ, বেগুনি কিংবা নীল পদ্মও হলুদের সাজে ব্যবহার করা হয়।’
হলুদের গয়নায় ফুল বাছাই করার আগে পোশাকের রং গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে চেহারার গড়ন, চুলের দৈর্ঘ্য, ওড়না থাকবে কি না, সেটাও দেখতে হবে।
খোলা চুলে সিঁথি করে তাতে ফুলের টায়রা বসাতে পারেন। আর বাকি চুলগুলো সামান্য কোঁকড়া করে একপাশে ছড়িয়ে রাখতে পারেন। এখন আবার ধাতবের সঙ্গে ফুলের গয়না মিলিয়ে পরা হচ্ছে। যেমন চোকার নেকলেসের সঙ্গে উজ্জ্বল কোনো রঙের ফুলের মালা। তাই টায়রা বা ঝাপটা হিসেবে মেটালের গয়না পরতে পারেন।
মেসি বান করে একপাশে ফুল গেঁথে নিতে পারেন। এতে সাজটা কৃত্রিম মনে হবে না। আবার আপনার চুল যদি লম্বা হয়, তাহলে উঁচু করে একটি খোঁপা করে তার পুরোটাতেই ফুল গেঁথে নিতে পারেন।
মাঝখানে সিঁথি করে পেছনের চুলগুলো একটু ফুলিয়ে খোঁপা বেঁধে নেওয়া যায়। খোঁপার চারপাশে কিংবা যেকোনো একপাশে ফুল পরতে পারেন। চুলে মুক্তার সঙ্গেও ফুল পরতে পারেন। সামনের দিকের চুলগুলো টুইস্ট করে তাতে মুক্তা বসানো যেতে পারে। আর পেছনে খোঁপা করে তাতে ফুল বসাতে পারেন। এ ধরনের স্টাইলে মাথায় ওড়নাও পরতে পারেন।
সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো
ছবিঃ সংগৃহীত