লম্বা চুলের যত্ন !
যে কোনো পোশাকের সঙ্গে লম্বা চুল মানানসই। বাঙালি মেয়েদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক শাড়ি অথবা থ্রিপিসে এটি দারুণ মানিয়ে যায়। ওয়েস্টার্ন পোশাকেও চুলের সৌন্দর্য বজায় থাকে একই রূপে। লম্বা চুলের সবচেয়ে সুবিধা হলো, ইচ্ছামতো নকশা করে বাঁধা যায়। কেউ আবার চুল ছেড়ে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। হাতে সময় অল্প থাকলে একটি রাবারে পেঁচিয়ে বেরিয়ে গেলেও চলে।
লম্বা রেশম কোমল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পাওয়ার জন্য রইল কিছু টিপস-
- চুলে খুশকি থাকলে নিমপাতা পেস্ট করে এর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার চুলের গোড়ায় লাগিয়ে আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ঘরে তৈরি এই প্যাক ব্যবহারে দ্রুত উপকার পাবেন।
- চুল যদি নিস্তেজ ও প্রাণহীন হয়ে থাকে তবে পাকা পেঁপে ব্লেন্ড করে নিন। এর সঙ্গে আধা কাপ টক দই মিশিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টার জন্য। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- যাদের অনেক বেশি চুল পড়ে আর খুশকি সমস্যা আছে তাদের জন্য মেথি খুব উপকারী। সারা রাত মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে ভেজানো মেথি ভালো করে পেস্ট করে চুলে আধা ঘণ্টার জন্য লাগিয়ে রাখতে হবে। চুল ধোয়ার পর পরিবর্তনটা নিজেই টের পাবেন।
- আপনাকে যদি ভ্রমণ অথবা ধুলোময় রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয় অবশ্যই চুল ভালোভাবে বেঁধে নেবেন। এমনকি স্কার্ফ ব্যবহার করতে পারলে আরও ভালো হয়। এতে চুল সুরক্ষিত থাকে। ধুলো-ময়লায় চুল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
- মাসে অন্তত একবার চুলের আগা ট্রিম করুন। আগা বেশি রুক্ষ হলে বা ফেটে গেলে চুলের আগা কেটে ফেলুন।
- যতই তাড়া থাকুক হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারে দ্রুত চুল ড্যামেজ হয়।
মূলত সুন্দর চুল পেতে বছরজুড়েই যত্ন নিতে হয়। তবে বর্ষাকালে এটি বাধ্যতামূলক। কারণ বর্ষার আবহাওয়া ঠাণ্ডা ও গরম। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে। মাথার ত্বকে জন্ম নেয় ছত্রাক। ফলে ত্বক ও চুল নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। এ জন্য স্বাভাবিক, তৈলাক্ত ও শুষ্ক- প্রত্যেক ধরনের চুলের যত্ন আলাদাভাবে করতে হবে। চুল পড়া, খুশকি, স্ক্যাল্পে ঘামাচির মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় বর্ষায়। তাই এ সময় চুলের ব্যাপারে অনেক যত্নবান হতে হবে।
যাদের চুল তৈলাক্ত, বৃষ্টির দিনে তাদের চুল আরও বেশি তৈলাক্ত দেখায়। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় চুল দেরি করে শুকায় বলে চুল নেতিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে শ্যাম্পু করার পর পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে চুলে দিলে চুলে বিশেষ উজ্জ্বলতা আসবে। লেবুর পরিবর্তে ভিনেগারও ব্যবহার করতে পারেন। চুলের ধরন তৈলাক্ত হলে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না। আর যাদের চুলের ধরন শুষ্ক, তারা শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দুটোই ব্যবহার করবেন।
একটি উপকারী প্যাক হচ্ছে টক দই, মধু, পাকা পেঁপে বা পাকা কলা ভালোভাবে পেস্ট করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এ প্যাকটি ২০ মিনিট রেখে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। স্বাভাবিক ধরনের চুলের যত্নও নেওয়া সবচেয়ে সহজ। তবে মনে রাখতে হবে চুলের গোড়ায় যেন ময়লা জমে না থাকে। প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে হবে। তবে বেশি করে পানি দিয়ে শ্যাম্পু পরিষ্কার করতে হবে। কন্ডিশনারও একই পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে হবে। যাদের চুলের ধরন শুষ্ক তাদের জন্য একটি উপকারী প্যাক হচ্ছে আমলা। এ প্যাক বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এ আমলা প্যাকের সঙ্গে টক দই ভালোভাবে মিশিয়ে মাথায় লাগাতে হবে। এটা ১৫ মিনিট রেখে পরে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। আর এ প্যাকটি তৈলাক্ত এবং স্বাভাবিক চুলের জন্যও ভালো।
সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন
ছবিঃ সংগৃহীত